নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ণ চরে যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই কেবল সবুজ-হলুদ সংমিশ্রণে বাঙ্গির দৃশ্য। চৈত্রের বাহারি মৌসুমী ফল বাঙ্গির বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে এখন তৃপ্তির হাসি।
Advertisement
পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় রায়পুরার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চান্দেরকান্দি এলাকার কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে। এদিকে উৎপাদিত ফসল নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয় কৃষকরা। অল্প পুঁজিতে ভালো মুনাফা হওয়ায় প্রতি বছরই চরাঞ্চলের মানুষ বাঙ্গি চাষে ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চান্দেরকান্দি এলাকার বেশিরভাগই কৃষকই বাঙ্গির চাষ করেন। এসব বাঙ্গি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করতে নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের জেলার পাইকারি ক্রেতাদের দেখা গেছে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, বাঙ্গিতে অন্যান্য ফসলের চেয়ে আয় বেশি হয়। তাই অধিকাংশ কৃষকই বাঙ্গি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। গতবারের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত বাঙ্গির ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারি দরে বাঙ্গিগুলো প্রতি ১০০ পিস ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা প্রতি পিস পাইকারি মূল্য হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
Advertisement
স্থানীয় কৃষক সুজন মিয়া জানান, তিনি গত টানা ৪ বছর যাবত বাঙ্গির চাষ করে আসছেন। এবার তিনি ৩৯.৬৭ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। এবার বাঙ্গি চাষে তার ব্যয় হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে তার জমির সকল ফসল বিক্রি করতে পারলে আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো লাভবান হতে পারবেন বলে ধারণা করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত বছর একই জমিতে তিনি ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় করে বাঙ্গির চাষ করে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এবার তিনি গতবারের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
পাইকারি ক্রেতা মোরশেদ মিয়া বলেন, আমরা এবছর প্রতি ১০০ পিস বাঙ্গি ৭ হাজার টাকায় কৃষকের জমি থেকে ক্রয় করেছি। বিভিন্ন খরচ বাদে প্রতি পিসে সর্বোচ্চ ৫ টাকা লাভ থাকলেই বাঙ্গি বিক্রি করে দেই।
বিভিন্ন পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকদের জমি থেকে বাঙ্গি ক্রয় করে এগুলো নরসিংদী জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার হাট-বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করেন। এতে তাদের প্রতি বাঙ্গিতে সব মিলিয়ে ৫ টাকা লাভ হলেই সন্তুষ্ট।
Advertisement
রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৭০০ মেট্রিক টন বাঙ্গি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত বাঙ্গির জমজমাট হাট না বসলেও কিছু কিছু বাঙ্গি বিক্রেতা চোখে পড়ছে। এগুলো তারা খুচরা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করছেন।
সঞ্জিত সাহা/এমএমএফ/জিকেএস