অর্থনীতি

শত বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ১৮ গুণ বড় হচ্ছে এসেনসিয়াল ড্রাগস

শত বছরের মহাপরিকল্পনা নিয়ে মানিকগঞ্জ সদরে ৩১ দশমিক ৫০ একর ভূমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) অবকাঠামো। এ জন্য ২ দশমিক ২০ লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন করা হবে। ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) ৬০ বছরের পুরাতন ও জীর্ণ প্ল্যান্টটি মানিকগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে।

Advertisement

সেখানে কারেন্ট গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস নীতিমালা অনুসরণ করে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এজন্য ‘এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থাপন’ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ১ হাজার ৯০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করবে। জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৬ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

১২ হাজার ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৯৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩ হাজার কোটি ৩৯ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৯৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেষ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। ১২টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement

প্রকল্পের উদ্দেশ্য

অত্যাবশ্যক ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করে সরকারি খাতে ওষুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতা প্রদান করা ও দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতকে শক্তিশালী করা এবং ওষুধ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মাধ্যমে আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা।

প্রধান কার্যক্রমসমূহ

৩১ দশমিক ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ২ দশমিক ২০ লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন করা হবে। ২৪টি বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা/অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বাউন্ডারি ওয়াল, সেন্ট্রাল ড্রেনেজ, রিজারভার, ফুটপাত, ওয়াকওয়ে, ইউটিলিটি ব্রিজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

Advertisement

এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৬টি ওয়াচ টাওয়ার ও ১টি ডিজিটাল পোট্রেট নির্মাণ, ৩১১৬টি আসবাবপত্র ও ২৮৪টি অফিস সরঞ্জাম ক্রয়, ৭২০টি কম্পিউটার ও ৪টি কম্পিউটার সফটওয়্যার ক্রয় করা হবে।

৪০ হাজার ৫০০ বর্গমিটার ল্যান্ডস্কেপিং এবং ১ হাজার ৪৬৪ জন পরামর্শক সেবা কেনা হবে প্রকল্পের আওতায়। প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ গুণগতমান বৃদ্ধির পরিমাণ ওষুধ উৎপাদনের মাধ্যমে সরকারি খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ওষুধ সরবরাহে বেসরকারি খাতের উপর নির্ভরতা কমিয়ে সরকারি খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত শক্তিশালী হবে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ‘এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, এটি একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানি। ঋণ ও ইকুইটি ছাড়া এটি কিছুই পায় না। এর চাহিদাও আছে। কিন্তু ঢাকায় জমি স্বল্পতার কারণে ওষুধ কোম্পানিটি চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এজন্য ১৮ গুণ বড় জায়গা নিয়ে এটি করতে হবে। ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে এটা করা হচ্ছে।

এমওএস/এমএইচআর/এএসএম