আলহামদুলিল্লাহ! রহমতের দশকে রমজানের রোজা রাখার সৌভাগ্য পাচ্ছি। রমজান মাস আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বড় নেয়ামত। পবিত্র এ মাসে একজন সাধারণ মানুষ নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।
Advertisement
রোজা পালনের মধ্যে অনেক পুণ্য নিহীত আছে। গাছে যখন ফুল ফুটে তখন মৌমাছিরা ফুল থেকে রস সংগ্রহ করে মৌচাকে মধু তৈরি করতে। এটি মৌমাছির নিত্যদিনের কাজ। যেখানেই ফুলের সন্ধান পায় সেখানেই তারা ছুটে যায়।
অনুরূপভাবে মুমিন মুত্তাকির জন্য রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার মাস রমজান। তারাও রমজানের কল্যাণ পেতে প্রস্তুত হয়ে যায়। রমজানের এমন অনেক দিক রয়েছে যা পালনের মাধ্যমে আমরা বিশেষ কল্যাণ পেয়ে ধন্য হতে পারি।
রমজানে দিনে রোজা ও রাতে তারাবি-তাহাজ্জুদের মাধ্যমে আমরা যদি নিজেদের জীবনে পরিবর্তন ঘটাতে পারি তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে গ্রহণ করে নেবেন।
Advertisement
বংশ বা আভিজাত্যে কিছু যায় আসে না; মূল হচ্ছে নেক আমল। এই রমজানে আমরা যেন আমাদের আমলের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারি। এটি আমাদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অপার কৃপা। তিনি অনুগ্রহ করে আমাদেরকে রোজা রাখার তৌফিক দিচ্ছেন।
মানুষ যদি ভাবে তাহলে দেখতে পাবে যে, আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহরাজির কোনো শেষ নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য রাস্তা তালাশ করে; তারা যদি রাস্তা খুঁজে নাও পায়, আমি আল্লাহ স্বয়ং তাকে রাস্তা দেখিয়ে দেব। নিশ্চয়ই আল্লাহ (সঠিক পথের অনুসন্ধানকারী) সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
Advertisement
এখানে আল্লাহ পাক এটাই বলছেন, যারা আল্লাহ তাআলার দিকে আসার চেষ্টা করে, তিনি তাদেরকে তার দিকে আসার সুযোগ করে দেন। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিকে আসার পথগুলোর মধ্যে একটি পথ হল রমজানের রোজা। রোজা আমাদেরকে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম।
আল্লাহ তাআলা এ মাসে একজন মুমিনের জন্য ইবাদত ও কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়াকে আবশ্যক করেছেন এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। যেহেতু এ মাসটি অত্যন্ত বরকতের মাস; তাই একজন মুমিনের স্মরণ রাখা উচিত, ছোট খাটো রোগ-ব্যধি ও দুর্বলতার অজুহাত দেখিয়ে, সুযোগের অন্যায় ব্যবহার করে রোজা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।
রমজানের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পুণ্যকর্মের মাধ্যমে জান্নাতে যত বেশি সংখ্যক দরজা দিয়ে প্রবেশ করা সম্ভব মানুষের তাতে প্রবেশের চেষ্টা করা উচিৎ। পূণ্যকর্মের মাধ্যমে আমাদেরকে সেই সকল উচ্চতায় পৌঁছার চেষ্টা করতে হবে যেখানে শয়তান পৌঁছতে পারে না।
রমজানের দিনগুলোতে ইবাদতের মান উচ্চ থেকে উচ্চতর করতে থাকা উচিত, দান-সাদকাতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, কেননা আমাদের নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
তিনি যেভাবে রমজানকে অতিবাহিত করেছেন, করতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই আমাদের রমজান অতিবাহিত করার চেষ্টা করতে হবে।
আমাদের সেই রোজা রাখা উচিত, যা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের উঠা-বসা, চলা-ফেরা, সর্বোপরি আমাদের প্রতিটি কথা ও কাজ দ্বারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হয়। তাই আমরা যদি পরিপূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা রাখি তাহলে এই রোজা আমাদের আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধন্য করবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোতে আরো বেশি পুণ্যের কাজ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম