আইন-আদালত

৭৭ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে ই-অরেঞ্জের ৫০০ গ্রাহকের রিট

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কাছে গেটওয়েতে আটকে থাকা ৭৭ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন প্রতারণার শিকার পাঁচ শতাধিক গ্রাহক। ই-অরেঞ্জের অর্থের উৎস অনুসন্ধানসহ রিটে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

রোববার (৩ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের পক্ষে ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম এ রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন এবং বীথি আক্তার ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন- মোহাম্মদ আফজাল হোসাইন, আরাফাত আলী, তারেকুল আলম, শাকিবুল আলাম সোহাগ, রানা খান ও হাবিবুল্লাহ জাহিদ।

Advertisement

রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে সময় মতো পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ ওঠে।

প্রতিষ্ঠার মাত্র দু-এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন অফারের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ই-অরেঞ্জ। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, এ ই-কমার্স কোম্পানিটি বিপুল অর্থ এরইমধ্যে বিদেশে পাচারও করেছে।

ই-ওয়ালেট, গিফ্ট কার্ডসহ আরও অন্যান্য অননুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

গ্রাহকেরা অনেক চেষ্টা করেও পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর নজরদারির অভাবে গত কয়েক বছরে এ প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্টের নামে গ্রাহকদের প্রলুদ্ধ করে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারও হয়েছে। এ অবস্থায় ই-অরেঞ্জের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এ রিটটি করা হয়েছে।

Advertisement

এদিকে অর্ডারের টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম