ধর্ম

মিশরে কামানের শব্দে সেহরি-ইফতার

বাতি জ্বালিয়ে রমজান বরণইতিহাসজুড়ে আছে মিশরীয়দের জমকালো সব সৃষ্টির কথা। সভ্যতার আদিযুগ থেকেই শানদার এ জাতির রমজান পালনের রীতিও খুবই চমৎকার। যেমন জমকালো তাদের সব কৃষ্টি ও নিদর্শন, তেমনি রমজান উদযাপনও করে জমকালো সব বাতি জ্বালিয়ে।

Advertisement

ফানুসে ফানুসে পবিত্র আমেজঅনেকটা ফানুস আকৃতির এসব বাতি তৈরি হয় ধাতু ও রঙিন কাঁচ দিয়ে। নিখুঁত এসব কারুকাজ মূলত শতবর্ষব্যাপী প্রচলিত মিশরীয় সংস্কৃতির অসাধারণ সব সৃষ্টিকর্মকেই মনে করিয়ে দেয়। পুরো রমজান মাসে রাস্তা, দোকান, বাড়ির ছাদ—সর্বত্র ছেয়ে যায় এই বাতির আলোয়। রমজান মাসের মহিমা যেনো পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে আলো হয়ে। সবার মনে জেগে ওঠা ত্যাগের মহিমার বাস্তবিক প্রকাশ হয়ে ওঠে এই বাতি।

সেহরিতে জাগায় মেসেহারাতিসেহরিতে সবাইকে জাগিয়ে দেওয়ার চিরায়ত মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হিসেবে মিশরের রাস্তায় ‘মেসেহারাতি’ নামের একদল মানুষের দেখা মেলে। তাঁরা নিঃস্বার্থভাবে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সবাইকে জাগিয়ে দেন সেহরির জন্য।

কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনারমজান মাসে তুর পাহাড়ের দেশ মিশরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। রোজা পালনের সুবিধার্থে সরকারি অফিস-আদালতের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়। এর ফলে মিশরের মানুষ ইবাদত এবং মসজিদে বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন।

Advertisement

একসঙ্গে ইফতার পালনদেশটিতে পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে ইফতার পালনের সংস্কৃতি আছে। তবে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সংস্কৃতিতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। আজকাল মিশরীয় তরুণরা ক্যাফে ও রেস্তোরাঁতেই ইফতার করতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে।

দলবেঁধে তারাবির জন্য রওনাতারাবির নামাজকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ সংস্কৃতি রয়েছে দেশটিতে। ইফতারের পরপরই দলবেঁধে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তারাবির জন্য রওনা হন মিশরীয় যুবকরা।

কামানের গোলার শব্দে সেহরি-ইফতারবাংলাদেশে যেমন মসজিদে সাইরেন বাজানোর মাধ্যমে সেহরি এবং ইফতারের সময় জানানো হয়। মিশরীয়রা এ ক্ষেত্রে কামানের গোলার শব্দকে অনুসরণ করে সেহরি এবং ইফতার করে।

ভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপবাসদেশটিতে মুসলিমদের পাশাপাশি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়েরও উল্লেখযোগ্য-সংখ্যক মানুষ রয়েছে। রমজান মাসে রোজার সম্মানে তারাও প্রকাশ্যে পানাহার থেকে বিরত থাকেন। খ্রিষ্টানধর্মীও অনেকে সারাদিন উপবাস থেকেও রোজার পবিত্রতা রক্ষা করেন।

Advertisement

মুনশি/এসইউ/জেআইএম