ধর্ম

রমজানকে স্বাগত জানিয়ে নবিজীর ঐতিহাসিক ভাষণ

রমজানকে স্বাগত জানিয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গুরুত্বপূর্ণ এক ভাষণ দিয়েছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এ ভাষণ মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুপ্রেরণা। কী ছিল নবিজীর ঐতিহাসিক সে ভাষণে? মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে তিনি কী বলেছিলেন?

Advertisement

রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। ১৪৪৩ হিজরির রমজানের চাঁদ দেখা গেছে। রহমত ও কল্যাণ নিয়ে এসেছে রমজান। তাই রমজানে নতুন দেখেও এভাবে দোয়া করতে বলেছেন নবিজী-

اَللهُ اَكْبَرُ اَللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَ الْاِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَ الْاِسْلَامِ وَ التَّوْفِيْقِ لِمَا تُحِبُّ وَ تَرْضَى رَبُّنَا وَ رَبُّكَ الله

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াসসালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্তাওফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।

Advertisement

অর্থ: আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ! (রমজানের) এ নতুন চাঁদকে আমাদের নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। আর তুমি যা ভালোবাস এবং যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, সেটাই আমাদের তাওফিক দাও। আল্লাহ তোমাদের এবং আমাদের প্রতিপালক।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

রমজানের রোজা পালনের নিয়তে ভোর রাতেই মুমিন মুসলমান সেহরি খাবে। সন্ধ্যা রাতে পড়বে রাতের  নামাজ তারাবি। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতে মুসলিমার উদ্দেশ্যে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ভাষণ দিয়েছেন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ ভাষণ মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর বিধান রমজানের ফরজ রোজা পালনে সর্বোত্তম অনুপ্রেরণা। হাদিসে এসেছে-

হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, শাবান মাসের শেষ দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দানকালে বলেন-

‘হে লোক সকল! তোমাদের কাছে একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং বরকতময় মাস উপস্থিত। এতে রয়েছে, এমন এক রাত; যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ মাসে আল্লাহ তাআলা সিয়াম (রোজা) ফরজ করেছেন এবং রাতে দীর্ঘ নামাজ আদায় তোমাদের জন্য পূণ্যের কাজ হিসেবে দিয়েছেন।

Advertisement

যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করলো, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ আদায় করলো। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ আদায় করলো, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ কাজ আদায় করলো। এ মাস ধৈয্যের মাস, আর ধৈয্যের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। এ মাস হচ্ছে সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস।’ (মিশকাত)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিস মানুষকে রমজানের রোজা গুরুত্বের সঙ্গে পালনে নিয়োজিত করার অনুপ্রেরণা দেয়। দীর্ঘ এক মাস আল্লাহর হুকুম যথাযথ পালনের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।

নবিজীর স্বাগত ভাষণ থেকে আরো বুঝা যায় যে, রমজান মাস হচ্ছে হেদায়েত পাওয়ার মাস। আল্লাহ তাআলার রহমত পাওয়ার মাস। গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার মাস এবং জাহান্নাম আগুণ থেকে নাজাত পাওয়ার মাস।

সুতরাং রমজানকে স্বাগত জানানোর এ ভাষণের ওপর যথাযথ আমল করে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য যথাযথভাবে রোজা রেখে এবং নফল ইবাদাত বন্দেগি করা প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য আবশ্যক কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার নির্ধারিত বিধান রমজান মাসের ফরজ রোজা পালন করার তাওফিক দান করুন। রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম