বছরঘুরে আবারও মুসলিম উম্মাহর দ্বারপ্রান্তে পবিত্র মাস রমজান। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোববার কিংবা সোমবার শুরু হবে রোজা। রোজার শুরু ও শেষে সেহরি এবং ইফতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেহরির পর রোজার নিয়ত আবার ইফতারের সময় দোয়া এবং ইফতারের আগে-পরেও রয়েছে তাসবিহ এবং দোয়া। তাই রোজা শুরুর আগ মুহূর্তে সেহরির পর রোজার নিয়ত, ইফতারের সময়ের দোয়াগুলো শিখে নেওয়া এখুনিই জরুরি। কারণ সেহরি ও ইফতার রোজার বরকতময় এবং কল্যাণের অনুসঙ্গ। দোয়া কবুলের অন্যতম সময়। বরকতে ভরপুর সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণ। তাই আল্লাহর ফরজ বিধান রোজা পালনের শুরুতে সেহরি ও নিয়তের গুরুত্ব এবং শেষে ইফতারের মুহূর্তের দোয়াগুলো জেনে নেওয়া এবং আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য তুলে ধরা হলো।
Advertisement
রোজা পালন‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে; যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া (আত্মশুদ্ধি) অর্জনে করতে পার। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
সেহরিরমজানের রোজা পালনের জন্য শেষ রাতে সেহরি খাওয়া আবশ্যক। এটি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ। অনেকেই তারাবি পড়ে গভীর রাতে কিছু খেয়ে শুয়ে পড়ে। সকালে ওঠে ফজর নামাজ আদায় করে। এমনটি করলে সেহরির বরকত অর্জিত হবে না। সেহরির বরকত সম্পর্কে হাদিসে একাধিক বর্ণনা এসেছে-১. হজরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'তোমরা শেষ রাতে খাবার খাও। তাতে বরকত রয়েছে।' (বুখারি ও মুসলিম)
২. হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,নিশ্চয়ই আল্লাহ ও ফেরেশতারা সেহরি গ্রহণকারীর জন্য প্রার্থনা করেন।' (তাবারানি ও ইবনে হিব্বান)
Advertisement
৩. হজরত আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'আমাদের এবং আহলে কিতাবের (আমাদের আগে আসমানি কিতাব পাওয়া ইয়াহুদি-খ্রিষ্টান) মধ্যে পার্থক্য হলো- সেহরি খাওয়া। আর আমাদের তো ভোর (সোবহে সাদেক) হওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়া ও পান করার অনুমতি রয়েছে।' (মুসলিম)
সেহরি খাওয়ার উদ্দেশ্য১. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'তোমরা দিনে রোজার জন্য সেহরির খাবারের সাহায্য নাও এবং রাতে নামাজের (তারাবি) জন্য দুপুরে নিদ্রাবিহীন বিশ্রাম গ্রহণ কর।'
২. অন্য হাদিসে এক সাহাবি বর্ণনা করেন, আমি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে দেখি তিনি শেষ রাতে খাবার খাচ্ছেন। এরপর তিনি বললেন, এটা বরকতময়। আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য তা দান করেছেন। তোমরা তা (সেহরি) ত্যাগ করো না।' (নাসাঈ)
সেহরি খাওয়ার সময়অনেকে এমন আছেন, যারা সেহরি না খেয়েই রোজা রাখেন, যা মোটেও ঠিক নয়। কেননা হাদিসের বর্ণনায় সেহরির মাঝে বরকত নিহিত। আবার কেউ কেউ সেহরির সময় হওয়ার আগেই সেহরি খেয়ে ফজর নামাজ আদায় না করেই ঘুমিয়ে যান। হাদিসে এসেছে-
Advertisement
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেহরি খাওয়া আর ফজরের নামাজের আজানের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল- পঞ্চাশ আয়াত কোরআন তেলাওয়াত করার সমান সময়।' (বুখারি)
২. হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর আজান শুনে সেহরি খাওয়া থেকে বিরত হতে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কারণ হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু রাত থাকতেই আজান দিয়ে দিতেন।' তাই সেহরির যে সময় নির্ধারণ করা আছে সেই সময়ই সেহরি খাওয়া উচিত।' (মুসলিম)
৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেহরি বিলম্বে (রাতের শেষভাগে) গ্রহণ করো।’ (তিবরানি)
আধুনিক যুগের ফকিহদের মতে, কুরআনুল কারিমের পঞ্চাশ আয়াত তারতিল সঙ্গে তথা যথানিয়মে ধীরস্থিরভাবে তেলাওয়াত করতে বিশ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়। তাই আজানের ২০ মিনিট আগে সেহরি খাওয়া শেষ করা সুন্নাত। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেহরি খাওয়াতে কিছুটা বিলম্ব করতে পছন্দ করতেন। উম্মতে মুহাম্মাদিকেও এ নির্দেশই দিয়েছেন; তারাও যেন এমনটি করেন।
সেহরিতে খাবারের পরিমাণসেহরিতে অধিক খাবার খেলে বান্দা রোজার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। কেননা অতিরিক্ত খাবার শরীরে আলস্য তৈরি করে। ফলে মানুষ যেমন ইবাদতমুখী হতে পারে না আবর জৈবিক চাহিদা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে অনাহারী ও ক্ষুধায় ক্লেষ্ট মানুষের কষ্ট অনুভব করা যায় না।
পক্ষান্তরে নাম মাত্র খাবার বা পানি গ্রহণ সেহরি করলে শারীরিক শক্তি একেবারেই নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে ইবাদত-বন্দেগি করাই দুষ্কর হয়ে পড়ে। সেহরির খাবারের পরিমাণ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন-
‘মানুষ স্বাভাবিক ক্ষুধায় যতটুকু খাবার গ্রহণ করে, সেহরিতে সেই পরিমাণ খাওয়া মুস্তাহাব। অর্থাৎ খুব বেশি বা কম নয়; বরং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা।’ (মাজমাউল উলুমি ওয়াল হিকাম)ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার থাকার পরও অনেকে সামান্য খাবার ও পানি দিয়ে নামমাত্র সেহরি করে থাকেন। এমনটি ঠিক নয়। কেননা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু করা সুন্নাত। সেহরিতে রয়েছে কল্যাণ। তাই খুব বেশি এবং একেবারে কম না খেয়ে পরিমিত পরিমাণ তথা সুন্নাত পদ্ধতিতে সেহরি খাওয়া উত্তম।
আজান চলাকালীন সেহরি খাওয়ারোজা ফরজ ইবাদত। অনেক সময় দেখা যায়, সেহরি খাওয়া অবস্থায় আজান শুরু হয়ে যায়। এমনটি কোনোভাবে কাম্য নয়। ফরজ রোজা পালনের জন্য সেহরির সময়ের প্রতি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সুতরাং কারো সেহরির সময় যদি আজান হয়ে যায়; তবে সঙ্গে সঙ্গে খাবার পরিহার করতে হবে।
সেহরি খাওয়ার পর না শোয়াসেহরি খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়া সুন্নাতের পরিপন্থী কাজ। শারীরিকভাবেও তা ক্ষতিকর। সেহরি খেয়ে জামাতে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে ফজরের নামাজ আদায় করে মসজিদে ইবাদত করতেন, সাহাবিদের দ্বীনের শিক্ষা দিতেন। সূর্যোদয়ের পর ইশরাকের নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতেন।
সেহরির পর রোজার নিয়তরমজানের রোজা রাখা যেমন ফরজ তেমনি রোজার জন্য নিয়ত করাও ফরজ। নিয়ত ছাড়া দিনভর না খেয়ে উপোস থাকা এবং স্ত্রী সহবাস না করলেও রোজা হবে না। রোজা রাখার জন্য সেহরির পর অন্তরের দৃঢ় সংকল্প করাই নিয়ত।
বহু প্রচলিত রোজার নিয়তنَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمউচ্চারণ : ‘নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম।’অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র রমজানের নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
সেহরির পর এভাবেও রোজার নিয়ত করা যেতে পারেبِصَوْمِ غَدٍا نَوَيْتُ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانউচ্চারণ : 'বিসাওমি গাদিন নাওয়াইতু মিন শাহরি রামাদান।'অর্থ : 'আমি রমজান মাসের আগামীকালের রোজা রাখার নিয়ত করছি।'
নিয়ত সম্পর্কিত কিছু জরুরি কথাআরবি কিংবা বাংলায় মুখে নিয়তের উচ্চারণ বলা জরুরি নয়। এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে শামিতে এসেছে, ‘আভিধানিক সূত্রে নিয়ত হলো ‘আজম’। আর ‘মনের দৃঢ় সংকল্পকে’ আজম বলা হয়।
কিন্তু রোজা রাখার জন্য নিয়ত ফরজ- এ বিষয়টি অনেকেই জানেন না। আবার অনেকে রোজার নিয়ত মুখে বলা বা মনের সংকল্প কোনোটিই করেন না। মুখে রোজার প্রচলিত নিয়ত তথা আরবি ও বাংলা শব্দগুলো উচ্চারণ করে অন্তরে রোজা রাখার দৃঢ় সংকল্প না থাকলে তা নিয়ত হবে না। তাই রোজা রাখার বিষয়টি অন্তরের দৃঢ় সংকল্পে থাকতে হবে।
সুতরাং মূল কথা হলো- রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত করতে হবে। মুখে উচ্চারণ করার পরও অন্তরে একনিষ্ঠ সংকল্প রাখতে হবে। তবেই রোজা আদায় হবে।
ইফতারের দোয়াইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়া পড়ে ইফতার করাبِسْمِ اللهِ - اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُউচ্চারণ : 'বিসমিল্লাহি - আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা আফতারতুঅর্থ : 'আল্লাহর নামে (শুরু করছি); হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।'
ইফতারের আগ মুহূর্তে বেশি বেশি ইসতেগফার পড়াاَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْمউচ্চারণ : 'আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।'
ইফতারের পর আল্লাহর শোকরিয়া আদায়ের দোয়াহজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُউচ্চারণ : ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’অর্থ : ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)
ইফতারের সুন্নাত পদ্ধতিযথাসময়ে ইফতার করাও সুন্নাত। ইফতারের ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু করণীয় এবং দিকনির্দেশনা। যা পালন করা সুন্নাত ও উত্তম। তাহলো-
দ্রুত ইফতার করাইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা সুন্নাত। এ সময় সাংসারিক কাজ বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত থাকা সুন্নাত পরিপন্থী কাজ। হাদিসে এসেছে-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (দেরি না করে) দ্রুত ইফতারকারী কল্যাণ লাভ করতে থাকে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আজানের সঙ্গে সঙ্গে ইফতারমাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা। ইফতার করার জন্য আজান শেষ হওয়ার অপেক্ষা করা ঠিক নয়। আর আজান শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষার কথাও কোথাও বলা হয়নি। বরং আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রমজানের রোজায় কল্যাণকর বিষয়গুলো সহজ করতে চান। আল্লাহ বলেন-‘আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান। কঠোরতা চান না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)
আজানের উত্তর দেওয়াইফতারের সময় রোজাদারের জন্য আজানের উত্তর দেয়া আবশ্যক নয়। বরং হাদিসের নির্দেশনা হলো- রোজাদার ও রোজা নয় এমন সব ব্যক্তির প্রতি নির্দেশনা হলো-‘তোমরা যখন আজান শুনবে, মুয়াজ্জিন যেমন বলে তেমন বলবে।’ (মুসলিম)
ইফতারে বেশি সময় ব্যয় না করাইফতারের জন্য বেশি সময় ব্যয় করা, নামাজ আদায়ে দেরি করা কিংবা জামাআতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা মারাত্মক নিন্দনীয় কাজ। হাদিসে এসেছে-হজরত ইবনে আতিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামান্য ইফতার গ্রহণ করে দ্রুত নামাজ আদায় করে নিতেন।’
ইফতারের সময় দোয়া করাদোয়া কবুলের মুহূর্তগুলোর মধ্যে ইফতারের সময়ও একটি। অনেকেই গল্প-গুজবের মধ্য দিয়ে ইফতার করে থাকেন। তাই এ সময় গল্প না করে দোয়া করার মাধ্যমে সুন্নাতের আমল করা। আবার ঘরের নারীরা এ সময় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাদের উচিত, এ সময় দোয়া করা। হাদিসে এসেছে-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। পিতামাতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া।’ (মুসনাদে আহমদ)
ইফতার অপচয় না করাঅপচয় সুন্নাত পরিপন্থী কাজ। চাই তা ইফতার হোক কিংবা অন্য খাবার। আর সংযমের মাসে ইফতারের বাড়াবাড়ি ও জৌলুস করাও ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন-‘তোমরা খাও ও পান করো। অপচয় কোরো না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত : ৩১)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত সেহরি ও ইফতারে সুন্নাত বিষয়গুলো মেনে চলা। হাদিসের ওপর আমল করা। সেহরি ইফতারের কুসংস্কার ও মন্দ বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকা। সেহরির পর নিয়ত করা, ইফতারের আগে তাওবা-ইসতেগফার করা, ইফতারের সময় দোয়া পড়া এবং ইফতারের পর শোকরিয়া আদায় করে দোয়া পড়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেহরি ও ইফতারের সুন্নাতের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস