স্বাস্থ্য

মেডিকেল ভর্তিযুদ্ধে ১ লাখ ৪৪ হাজার শিক্ষার্থী

এমবিবিএস (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আজ। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা চলবে বেলা ১১টা পর্যন্ত। মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক ভর্তিচ্ছু অংশ নিচ্ছেন। এ বছর মোট এক লাখ ৪৩ হাজার ৭৩০ জন পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সারাদেশে সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন সংখ্যা চার হাজার ৩৫০টি। এ হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়াই করবেন ৩৩ জনেরও বেশি পরীক্ষার্থী।

Advertisement

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু হয়। ১৫ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ ও ১৬ মার্চ পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ফি'র টাকা জমা নেওয়া হয়।

জানা গেছে, সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে এ বছর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবছর রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৫টি ভেন্যুতে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন গতবছর করেন এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন। তবে পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।

এদিকে ঢাকা মহানগরীতে ১৮টি কেন্দ্রে মোট ৬১ হাজার ৬৭৮ জন পরীক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এরইমধ্যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও নকলমুক্ত রাখতে পরীক্ষা কেন্দ্রে সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন না। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে মোবাইল কোর্ট।

Advertisement

গত সোমবার (২৮ মার্চ) ডিএমপি সদরদপ্তরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। সভায় উল্লিখিত নির্দেশনাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণরোধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসার জন্য বিশেষ নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। কেউ মাস্ক না পরে এলে মাস্ক সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় সভায় বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ। পরীক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ছাড়া অন্য কোনো কাগজ সঙ্গে নিতে পারবেন না। সকাল ৮টায় কেন্দ্রের গেট খুলে দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। সাড়ে ৯টার পর কেন্দ্রের গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় সব পরীক্ষার্থীর দেহ তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে। কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন না। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে মোবাইল কোর্ট।

পরিস্থিতি বিবেচনায় মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হবে। যেন তারা ১ এপ্রিল সকাল ৮টার মধ্যে কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত থাকতে পারেন।

Advertisement

স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মোট ১০৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এতে মোট আসনসংখ্যা ১০ হাজার ৬৯৭টি। তার মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে চার হাজার ৩৫০টি এবং বেসরকারি ৭০টি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ছয় হাজার ৩৪৭টি।

মেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত বছরের মতো এবারও ১০০ নম্বরের ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। প্রতিটির প্রশ্নের মান ১। এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টায়। পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২৫, জীববিজ্ঞানে ৩০, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ১০ নম্বর (মোট ১০০) থাকবে।

লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ পেতে হবে। এর কম পেলে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবেন। কেবল কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকাসহ ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ২০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করে মূল্যায়ন করা হবে। লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে।

বিএ/এমএস