‘মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাপ এবং মাথাপিছু আয় বের করার বর্তমান পদ্ধতি শতভাগ সঠিক নয়। ভিত্তিবছরের কারণে একই ডাটা ভিন্নভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। এ কারণে দুটি দেশের মধ্যে মাথাপিছু আয়ের তুলনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অবস্থান বিপরীতমুখী হয়ে যেতে পারে। সঠিক এবং প্রকৃতচিত্র পেতে জিডিপি পরিমাপের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে।’
Advertisement
বুধবার (৩০ মার্চ) এক সেমিনার এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন কানাডার মনট্রিলের কনকোডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ এম আহসান। এ সেমিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা অংশ নেন।
জিডিপি নির্ণয়ের পদ্ধতিগত দৃষ্টিকোণ বিষয়ক এ সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক সৈয়দ এম আহসান বলেন, মাথাপিছু আয় এবং জিডিপি নির্ণয়ের ভিত্তিবছরের ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের তুলনা করতে একটি আদর্শ মানদন্ড কী হবে, তা এখনো একটা বড় প্রশ্ন বটে।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০১০ সালকে ভিত্তিবছর ধরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পরিমাপ করা হতো। এখন ২০১৫ সালকে ভিত্তিবছর ধরে সূচক নির্ণয় করা হয়। এতে হঠাৎ সব সূচক বেড়ে গেছে। এ কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এবং জিডিপির হিসাবে বড় পার্থক্য তৈরি হয়েছে। আবার মুদ্রার বিনিময় হারের ভিন্নতারও একটা ভূমিকা থাকে এক্ষেত্রে।
জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ রকম ফাঁদের কারণে ১৯৮৮ সালে মাথাপিছু আয় এবং জিডিপির হিসাবে জাপান যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায়। বাস্তবে তখনো যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় জাপান অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ছিল না।’
বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন কিংবা মাথাপিছু আয়সহ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সূচক নির্ণয় পদ্ধতির পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুারো (বিবিএস) বিভিন্ন সূচক নির্ণয়ে পরিবারের আয়কে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। ভিত্তি আসলে মাথাপিছু আয় হওয়া উচিত। কারণ সব পরিবারের সদস্য সংখ্যা সমান নয়। ফলে পরিবারের তথ্যে মাথাপিছু আয়ের প্রকৃত চিত্র উঠে আসার কথা নয়।
বিষয়গুলো ন্যশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল কাউন্সিলে তোলার কথাও জানান বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।
Advertisement
এমওএস/এএএইচ/এএসএম