কিশোরগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের খরস্রোতা নরসুন্দা নদী এখন মৃতপ্রায়। শত কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ হলেও ফিরিয়ে আনা যায়নি নদীর গতিপ্রবাহ। বরং ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে নরসুন্দা।
Advertisement
এ অবস্থায় নদীরক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোসহ নদীতে ময়লা আবর্জনা না ফেলতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বিডি ক্লিন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘদিন ধরে নদীর দুই তীর, ওয়াকওয়ে ও ড্রেনে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা কুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলছেন।
এবার তারা নরসুন্দা নদী থেকে কুড়িয়ে আনা ময়লা ও পলিথিন দিয়ে তৈরি নদীর প্রতীকী ঢেউ আর ফেলে দেওয়া পানি ও কোমল পানীয়র ছিপি দিয়ে তৈরি করেছেন দৃষ্টিনন্দন মানচিত্র।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘আমি নরসুন্দা বলছি, আমি ভালো নেই’ শিরোনামে এ প্রদর্শনী সাড়া জাগিয়েছে নরসুন্দা ওয়াকওয়েতে ঘুরতে আসা মানুষের মাঝে।
Advertisement
বোতলের ছিপি দিয়ে কিশোরগঞ্জের মানচিত্র ছাড়াও প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে নানা শো-পিস তৈরি করেছে বিডি ক্লিন। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে নদীতে ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ ও খোলা জায়গায় যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার নেতিবাচক দিক তুলে ধরে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে নানা স্লোগানে।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ সংলগ্ন নরসুন্দা মুক্তমঞ্চে ময়লা দিয়ে তৈরি নদীর কৃত্রিম ঢেউ ও বোতলের ছিপির তৈরি জেলার মানচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে বিডি ক্লিন। এ দিনে সংগঠনের কর্মীরা নদীর তীরে ফেলে রাখা ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। পাশাপাশি আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে অংশ নেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল ইসলাম সরকার।
বিডি ক্লিন কিশোরগঞ্জের সমন্বয়ক মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয় জানান, বিডি ক্লিনে ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। আমরা প্রতি সপ্তাহে একদিন শহরের ভেতরের অংশে নরসুন্দা নদীর দুই তীরের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করি। নিজেরা চাঁদা দিয়ে সংগঠনের খরচ চালাই।
নদী ও ড্রেন থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী, পলিথিন সংগ্রহ ছাড়াও সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ কুড়িয়ে বিনষ্ট করেন বিডি ক্লিনের সদস্যরা।
Advertisement
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিত শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করছে। পাশাপাশি বিডি ক্লিনের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এ বিষয়ে তৎপর হলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভাকে আরও পরিচ্ছন্ন রাখা যাবে। আমরা এ সংগঠনটিকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
এফএ/জেআইএম