ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি শপিং মলের বাইরে কয়েক দফা বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য, পাঁচ হামলাকারী ও সাত বেসামরিক নাগরিক রয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সারিনাহ শপিংমলের বাইরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। খবর আল জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সারিনাহ শপিংমলের বাইরে দফায় দফায় অন্তত সাতটি বিস্ফোরণ হয়েছে। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি চলে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, জাকার্তা পুলিশ চার হামলাকারীকে আটক করেছে। স্থানীয় সময় বিকেল ৩ টার দিকে পুলিশি অভিযান শেষ হয়েছে। পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তবে জাকার্তা পুলিশ প্রথমে পাঁচ বন্দুকধারী, পাঁচ পুলিশ ও সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর জানালেও পরে চার হামলাকারীসহ সাতজনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা রাস্তায় অনেক মানুষকে পড়ে থাকতে দেখেছেন। প্রেসিডেন্ট প্যালেসের কাছে ওই শপিং মলের পাশে জাতিসংঘের অফিস রয়েছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তা জেরেমি ডগলাস জানান, দূতাবাস থেকে ৫০ মিটার দূরে বিস্ফোরণ হয়েছে। প্রথমে জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হলেও পরে বলা হয়, নেদারল্যান্ডের একজন কর্মকর্তা মারাত্মক আহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মেট্রো টেলিভিশনের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান বলছে, শপিংমলের বাইরে একটি ক্যাফেতে পাঁচ হামলাকারী এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে। এদের মধ্যে তিনজন আত্মঘাতী ছিল; যারা ওই ক্যাফেতে নিজেদের উড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া আরো দুই হামলাকারী একটি পুলিশ পোস্টে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। তবে অসমর্থিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান বলছে, শপিং মলের বাইরে অন্তত ১৪ জনের একটি দল সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নিয়েছে। এ ঘটনার পর পুরো জাকার্তা জুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রায় এক কোটি মানুষের ওই শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে কারা এ হামলায় জড়িত থাকতে পারে সেবিষয়ে এখনো অন্ধকারে পুলিশ। দেশটির পুলিশ প্রধান বলছেন, প্যারিস হামলায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছে। তবে আইএসের জড়িত থাকার বিষয়টিকে নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। পশ্চিম জাভা সফরে থাকা দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো হামলাকারী ও তাদের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০০৯ সালে দেশটির দুটি হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় ৯ জন নিহত হয়। এরপর বৃহস্পতিবারের এ হামলায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এসআইএস/আরআইপি
Advertisement