আন্তর্জাতিক

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট: লাগাম টানা যাচ্ছে না জ্বালানির দামে

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পরই পর্যটননির্ভর দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়ে। তার ওপর যোগ হয় বৈদেশিক ঋণের বোঝা। এ অবস্থায় ডলার সংকটে কমে গেছে দেশটির আমদানি। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে জ্বালানিখাতে। জানা গেছে, দেশটির বড় একটি জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোলের দাম ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বৃদ্ধি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

Advertisement

লঙ্কা আইওসি নামের কোম্পানিটি শ্রীলঙ্কার বাজারের এক তৃতীয়াংশ জ্বালানি সরবরাহ করে। শনিবার এটি জানায়, এক লিটার প্রেট্রোলের দাম বাড়িয়ে ৩০৩ রুপি করা হয়েছে। ২৫৪ রুপি থেকে বাড়িয়ে এ নতুন এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তাছাড়া দুই সপ্তাহ আগে কোম্পানিটি পেট্রোলের দাম বাড়ায় ২৫ শতাংশ।

কোম্পানি জানায়, মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে শ্রীলঙ্কান মুদ্রার ৩০ শতাংশ অবমূল্যায়ন হওয়ায় জ্বালানির দাম বেড়েছে। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশন তাৎক্ষণিকভাবে দাম না বাড়ালেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এটিও একই পথে হাঁটবে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এই প্রথম তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এরই মধ্যে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ তলানিতে ঠেকেছে। দ্বীপ রাষ্ট্রটির বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ আমদানিতে ডলার সরবরাহ করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে তেলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অন্তত চারজন মানুষ মারা গেছেন।

Advertisement

এর আগে তেল-গ্যাসের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি ও বিতরণ ব্যবস্থায় সৃষ্ট অরাজকতা মোকাবিলায় সেনা নামানোর ঘোষণা দেয় শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দেশটির শত শত গ্যাস স্টেশন ও পেট্রল পাম্পে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেয় লঙ্কান সরকার।

বর্তমান সংকট সামাল দিতে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। সেজন্য বহু দেশ ও সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে দেশটি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করছে লঙ্কান সরকার। সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণ পেতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে দেশটি।

এমএসএম/এএসএম

Advertisement