মিত্র দেশগুলোর রুশ জ্বালানি-নির্ভরতা কমাতে তেল-গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) কানাডীয় প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী জোনাথন উইলকিনসন জানিয়েছেন, চলতি বছর দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল পর্যন্ত তেল ও গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে তার দেশ। খবর আল জাজিরার।
Advertisement
এক বিবৃতিতে উইলকিনসন বলেছেন, রুশ আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় মিত্রদের সাহায্য করার লক্ষ্যে জ্বালানি উৎপাদন প্রায় পাঁচ শতাংশ বাড়াবে কানাডা।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) বৈঠকে যোগ দিতে বর্তমানে প্যারিসে রয়েছেন কানাডীয় প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি বলেন, ইউরোপীয় বন্ধু ও মিত্রদের জন্য কানাডাসহ অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তারা বলছে, সাময়িকভাবে রুশ তেল-গ্যাস বাদ দিতে এবং মহাদেশ জুড়ে শক্তি রূপান্তরে (এনার্জি ট্রানজিশন) আমাদের সাহায্য দরকার। কানাডা দুটি বিষয়েই সাহায্য করতে প্রস্তুত।
ইউরোপ রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি আমদানি করে। কিন্তু গত মাসে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর জেরে পশ্চিমা নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, তারা রুশ জ্বালানি-নির্ভরতা কমিয়ে আনবেন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা রুশ জ্বালানি আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দামও বাড়ছে হু হু করে।
Advertisement
সৌদি আরব, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পর কানাডা হচ্ছে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদক। ইউক্রেন সংকটের কারণে কানাডার জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
তবে এতে বাধ সেধেছেন পরিবেশবাদীরা। তাদের দাবি, রুশ জ্বালানির শূন্যস্থান পূরণে তেল-গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো জলবায়ু সংকট আরও বাড়িয়ে তুলবে। তাছাড়া, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে দ্রুতগতিতে জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর মতো অবকাঠামো সক্ষমতাও নেই কানাডার।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো পিটার গ্লিক বলেছিলেন, আমরা জানি, জীবাশ্ম জ্বালানি জলবায়ুর স্থিতিশীলতা ধ্বংস করছে এবং বিদেশি তেলের ওপর নির্ভরতা আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ব্ল্যাকমেইলের সামনে দুর্বল করে তোলে। সুতরাং যদি কিছু করতেই হয়, তবে অন্যের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিবর্তে সামগ্রিকভাবে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির দিকে এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ তৈরি করেছে ইউক্রেন সংকট।
কেএএ/জিকেএস
Advertisement