বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের পাঁচমাসের শুঁটকি তৈরির কর্মযজ্ঞ প্রায় শেষের পথে। গত দু-তিনদিন ধরে শুঁটকি উৎপাদনকারী পাঁচটি চরের জেলে-মহাজনরা তাদের থাকার অস্থায়ী ঘর, শুঁটকি শুকানোর মাচা, শুঁটকি সংরক্ষণের ঘরসহ সবকিছু গুটিয়ে চর ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে বাড়ি ফেরার প্রথম যাত্রা শুরু করেন জেলেরা।
সূত্র জানায়, প্রথম যাত্রায় আলোরকোল, মাঝের কিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, মেহের আলীর চর, শ্যালার চরসহ পাঁচটি চর থেকে চার শতাধিক ট্রলার ছেড়ে গেছে। একেকটি ট্রলারে ১০ থেকে ১২ জন করে জেলে রয়েছেন। তাতে প্রায় পাঁচ হাজার জেলে চর ছেড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, এ বছর শুঁটকি উৎপাদনের পরিমাণ এবং এ খাত থেকে কী পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে সে হিসাব এখন পর্যন্ত করা হয়নি।
আলোরকোল শুঁটকি পল্লীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ফরেস্টার) দিলিপ মজুমদার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুঁটকি উৎপাদনের সবচেয়ে বড় চর হচ্ছে আলোরকোল। এখানে ৭৭৬টি শুঁটকি সংরক্ষণ ও বসতঘর রয়েছে। জেলে-মহাজন মিলিয়ে রয়েছেন আট হাজার ৩০০ জন। এরমধ্যে একদিনেই তিন হাজারের বেশি জেলে চলে গেছেন। বাকিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
Advertisement
দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মৌসুম শেষ হতে আর কয়েকদিন বাকি। ৩১ মার্চের মধ্যে সবগুলো চর থেকে জেলে-মহাজনরা চলে যাবেন। প্রথমবারে (বৃহস্পতিবার) পাঁচ হাজারের মতো জেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। অন্যরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৌসুম শেষ হলেও মহাজনদের এখনো ব্যবসায়িক হিসাব শেষ হয়নি। এ কারণে শুঁটকির উৎপাদন ও রাজস্বের পরিমাণ এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সঠিক হিসাব পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।’
প্রতিবছর ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর জেলেপল্লীর আওতাধীন পাঁচটি চরে শুঁটকি উৎপাদন। চলে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এবছর জেলে, মহাজন ও অন্যান্য ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অবস্থান করছেন চরগুলোতে। এজন্য বনবিভাগ থেকে জেলে ও মহাজনদের থাকার জন্য ৯৮৫টি অস্থায়ী ঘর এবং ৬৬টি ডিপো ঘরের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এসআর/জেআইএম
Advertisement