দেশজুড়ে

শেরপুরে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা শুক্রবার

শেরপুর শহরের নবীনগর ছাওয়াল পীরের দরগা সংলগ্ন বিশাল খোলা মাঠে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা বসবে। নবীনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও এ পৌষমেলার আয়োজন করা হয়েছে। পৌষমেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ‘গাঙ্গি’ খেলা (কুস্তি) ছাড়াও ঘোড়দৌড়, সাইকেল রেস এবং তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।‘চে..লে..লে..লে..ঢুই, ‘চে..লে..লে..লে..ঢুই..ঢুই’-ধ্বনিতে হাঁক চলবে গাঙ্গীবীরের হাত ধরে তার প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজতে। কেউ একজন এগিয়ে এলে তার সঙ্গে চলে ওই গাঙ্গীবীরের ‘গাঙ্গী’ খেলা। তিন মিনিটের গাঙ্গী খেলায় যিনি জয়ী হন তাকে নিয়ে হাত ধরে আবারও একইভাবে হাঁক ছেড়ে খোঁজা হয় পরবর্তী চ্যালেঞ্চার। এভাবেই একের পর একজন গাঙ্গীবীরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয় ‘গাঙ্গী’ খেলার চূড়ান্ত বিজয়ী। এই গাঙ্গী খেলা কোথাও ‘কুস্তি’ আবার কোথাও ‘বলি খেলা’ নামে পরিচিত। তবে শেরপুরে পৌষমেলার প্রধান আকর্ষণ এই ‘গাঙ্গী খেলা’। বড়-মাঝারি-ছোট এ তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয় গাঙ্গী খেলা।বিভিন্ন খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। মেলায় বিভিন্ন পিঠা ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মজাদার খাবারের দোকান বসে। পাশের পালপাড়া এলাকার মৃৎশিল্পীদের সুনিপুণ হাতে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র ছাড়াও শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালার দোকানের পসরাও সাজিয়ে বসেন দোকানীরা। এছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্যের চিনির তৈরি সাজ, উরফা, কদমা, বাতাসা, নিমকি কালাই, খুরমা, ঝুরি, মিষ্টি এবং বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকানও বসে। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচেপড়া ভিড়ে পৌষমেলা হয়ে উঠে জমজমাট ও প্রাণবন্ত। মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। রাতে এ উপলক্ষে দরগাহ প্রান্তরে আয়োজন করা হয় বাউল গানের আসরের। পৌষমেলাকে ঘিরে নবীনগর ও আশপাশের এলাকার বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েরা বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসার প্রচলনও রয়েছে।পৌষ মেলার আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর মজনু জানান, স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী প্রায় ১৬৩ বছর যাবত এ মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রতি বছর ছাওয়াল পীরের দরগাহ সংলগ্ন মাঠে বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন (পঞ্জিকা মতে) এ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভিড় করে।হাকিম বাবুল/এসএস/পিআর

Advertisement