সাহিত্য

ফারহানা ইলিয়াস তুলির একগুচ্ছ কবিতা

মুখরিত দুপুরতখনও ভাগ হয়নি বসন্তকাল। রোদের ঘরবদল দেখেযে ফালগুন তৃপ্ত ছিল না-আমরা সেই ভোরের কোলেইমাথা রেখে লিখতে চেয়েছিলাম প্রেমের চাষবিন্যাস।একদিন আমাদের মাঠে ফলবে ফসল, আমাদের স্বাধীনতারস্তম্ভ মাথা উঁচু করে বরণ করবে প্রজন্মের কুচকাওয়াজ,এমন স্বপ্ন ছিল আমাদের। ছিল পাখির কলতানের মতোমুখরিত দুপুর। ছিল সমবেদনার সুরে আঁকা রঙিন একতারা।আমরা লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলাম যে সব অভিযোগ, তা অনুকূল হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে দিতে পাখিদের বলেছিলাম,সবুজের সহাবস্থান চাই। মানুষের জন্য আবার লিখতে চাইমার্বেল মৌসুমের কিছু শৈশবী গান। অবিকল বিলাপগুচ্ছদৃষ্টিসমূহ ফিরে যাচ্ছে। ফিরে যাচ্ছে দরিদ্র মানুষের জন্যআগত সকল উপভাতা। রিলিফের চাল। ফিরে যাচ্ছে,ওষুধ-পথ্য। লবণ-পানির স্যালাইন। ফিরে যাচ্ছে মেঘ।ফিরে যাচ্ছে ছায়া। রান্নার সকল উপকরণ থেকে হাতসরিয়ে নিচ্ছে গৃহিণী। শাবল চালাবার জন্য যারা মাঠেনেমেছিল-তারাও গুটিয়ে নিচ্ছে হাত। অবিকল বিলাপগুচ্ছঝরে পড়ছে মানুষের গৃহে। শিশুরা দেশপ্রেমের ইতিহাসভুলে, পড়ছে লাগাতর অবরোধ কাহিনি। এই মাটি থেকেক্রমশঃ ফিরে যাচ্ছে প্রেম। ভোরের গোলাপগুলো-মাথা উঁচু করার সাহস দেখাতে পারছে না এই ঘন লোকালয়ে।ব্যাকরণবিহীন সন্ধ্যাগুলোফুল ও সুতোর সংসারকে আমরা বলি মালা। যে চাদরমাঘে ঢেকে রাখে আমাদের শরীর, তাকে বলি শীত নিবারক।যে গ্রন্থ লিখে রাখে আমাদের হৃদয়ের সমীকরণ, তাকেই বলিমনোবিজ্ঞান। অনেকটা আবিষ্কারক হয়েই খুঁজে দেখি অক্সিজেনেরঘরবাড়ি। নিঃশ্বাসের বিশুদ্ধ উপাদান। কখনও ব্যাকরণবিহীনকথামালার শরীরে সন্ধ্যাগুলোকে জড়াতে জড়াতে বলি,ভালোবাসি-ভালোবাসি।ডোরবেলদরজায় ঝুলে আছে ডাক দেবার ঘণ্টা। ডোরবেল কিংবাকলিংবেল বলতেই পারো তাকে। বেজে যাবার ইচ্ছে নিয়েজন্ম নেয় যে নদী, অথবা সুরেলা গান শোনাবে বলেউত্তর থেকে উড়ে আসে যে পাখি- তাকেও বলতে পারোপড়শি প্রহরী। আমি আগমনের অপেক্ষায় থেকে যে নক্ষত্রকে আমার ঘরে আসতে বলি, সে-ও মাঝে মাঝে আমার ডোরবেল বাজায়।আমাকে জাগিয়ে রেখে ঘুমনগরে হারিয়ে যায় কল্পনার চন্দ্রপুত্র।মানুষেরা ছায়ার সান্নিধ্য পছন্দ করে বলে ডোরবেলগুলোমাঝে মাঝেই তৈরি করে গৃহপ্রবেশের ঘনিষ্ট ছায়াপথ।এইচআর/পিআর

Advertisement