কনকনে শীত উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমে নওগাঁয় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন সরিষা মাড়াইয়ে। জেলার রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ হলেও আশানুরূপ ফলন হচ্ছে না। তবে সরিষার মাড়াইয়ের শুরুতেই বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি। কৃষকরা জানিয়েছেন, সরকারিভাবে তাদের কাছ থেকে সরাসরি সরিষা ক্রয় করলে বেশি লাভবান হবেন।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ৩৪ হাজার ৮৭২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে উন্নত ফলনশীল (উফশী) জাতের বারি-১৪, ১৫, টরি-৭ এবং ২ হাজার ৭৭২ হেক্টর জমিতে স্থানীয় (দেশীয়) সরিষার আবাদ করা হয়। হিসাব অনুযায়ী (উফশি) সরিষা প্রতি হেক্টর জমিতে ১ দশমিক ২ মেট্রিক টন অর্থাৎ প্রতি বিঘায় প্রায় ৪ থেকে ৬ মণ ও দেশীয় জাতের সরিষা প্রতি হেক্টর জমিতে ১ মেট্রিক টন অর্থাৎ প্রতি বিঘায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ মণ হারে উৎপাদন হয়। এ হিসাবে জেলায় এ বছর ৪১ হাজার মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে। তবে প্রতি বিঘায় সরিষার আশানুরূপ ফলন কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষকরা।রাণীনগর উপজেলার চকবলরাম গ্রামের জনি মন্ডল জানান, গত বছর এক বিঘায় দেশীয় জাতের সরিষা চাষ করে তিন মণের বেশি উৎপাদন হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে তিন মণের চেয়ে কম উৎপাদন হয়েছে। মান্দা উপজেলার ভারশোঁ গ্রামের হারুন উর রশিদ জানান, প্রতি বিঘাতে সরিষা চাষ করতে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আড়াই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের টরি-৭ সরিষা চাষ করেন। বিঘা প্রতি যেখানে ৫ থেকে ৭ মণ হারে সরিষার ফলন হওয়ার কথা সেখানে গড়ে ৪ মণের কিছু বেশি ফলন হয়েছে।বালিচ গ্রামের বকুল হোসেন জানান, গত বছর সরিষা মাড়াইয়ের শুরুতেই বাজার ছিল ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মণ কাঁচা সরিষা এবং শুকনো ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা মণ। এ বছরের শুরুতেই কাঁচা সরিষার দাম ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা আর শুকনো সরিষার দাম ১৬শ’ থেকে ১৭শ’ টাকা।ফলন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়া এবং কুয়াশা কম থাকার কারণ উল্লেখ করেন। কৃষকরা বর্তমানে সরিষার ভালো দাম পেয়ে খুশি হয়ে জানিয়েছেন, আগামীতে সরিষার দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে সরাসরি সরিষা ক্রয় করার দাবি জানিয়েছেন।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা বলেন, জেলার অল্প সংখ্যক জমিতে আগাম সরিষা মাড়াই শুরু হয়েছে। আগাম সরিষার ফলন তুলনামূলক ভালো হয় না। আর এক সপ্তাহ পর থেকে জেলার অধিকাংশ জমির সরিষা মাড়াই শুরু হবে। সে সব জমি থেকে কাঙ্ক্ষিত সরিষার ফলন পাওয়া যাবে। এছাড়া সরিষা উৎপাদনে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই। আব্বাস আলী/এসএস/পিআর
Advertisement