স্বাস্থ্য

সপ্তাহে মৃত্যু কমেছে ৭৭ শতাংশ, শনাক্ত অর্ধেক

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহে (১৪-২০ মার্চ) এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু, শনাক্তসহ সব সূচকে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে করোনায় মৃত্যুর হার কমেছে ৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং শনাক্ত ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ। একইসঙ্গে নমুনা পরীক্ষা ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ এবং সুস্থতা ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।

Advertisement

আগের সপ্তাহে (৭-১৩ মার্চ) মৃত্যু ৫০ শতাংশ, শনাক্ত ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ, নমুনা পরীক্ষা ২৬ দশমিক ২ শতাংশ, সুস্থতা ৫২ দশমিক ১ শতাংশ কমেছিল।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের (এপিডেমিওলজিক্যাল) ১১তম সপ্তাহ (১৪-২০ মার্চ) ৮০ হাজার ৪৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ১২৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এ সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয়জন।

Advertisement

এর আগের সপ্তাহ অর্থাৎ দশম সপ্তাহে (৭-১৩ মার্চ) এক লাখ ১০ হাজার ৭৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ২২০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। এসময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ৫৪৮ জন।

এদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আজও কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা রয়েছে ২৯ হাজার ১১৭ জনই। একই সময়ে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১২১ জন। এনিয়ে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৬ জনে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ১১ শতাংশ।

একদিনে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২৩৪ জন রোগী। এনিয়ে দেশে করোনা থেকে সেরে উঠেছেন মোট ১৮ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ জন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনিক করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আগের দিন সোমবার (২১ মার্চ) ১১৬ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। তবে এদিন করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি বলে জানায় অধিদপ্তর।

Advertisement

এর আগে গত ১৫ মার্চ ৯৬ দিন পর করোনায় মৃত্যুশূন্য ছিল দেশ। এরপর ১৬ ও ১৭ মার্চও কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে তিনদিন পর ১৮ মার্চ দুজনের মৃত্যু হয়। ওইদিন ১০৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এর পরদিন ১৯ মার্চ আবারও করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন দেখে বাংলাদেশ। এদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও একশ’র নিচে নামে। তবে ২০ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এদিন শনাক্ত হয় নতুন ৮২ জন রোগী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ৮৭৮টি ল্যাবরেটরিতে ১০ হাজার ৯৭৪টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১০ হাজার ৯৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন ৯১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৬ লাখ ১৪ হাজার ৭৩৫ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এমইউ/এএএইচ/এএসএম