নওগাঁর বদলগাছীর রাকিবুল ইকবাল (২৫) ঢাকায় চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। নিহত রাকিবুল ইকবাল উপজেলার পশ্চিম গর্ন্ধবপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক এলাহী বক্সের ছেলে।নিহতের পরিবারের অভিযোগ, একটি প্রতারক চক্র ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাকিবুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে গত বুধবার ভোরে ঢাকা থেকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়েছে।নিহত রাকিবুল ইকবালের বাবা এলাহী বক্স জানান, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ে ‘কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে চাকরির জন্য ছোট ছেলে রাকিবুল ইকবালের সঙ্গে পাশের উত্তর তাজপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে সবুজ হোসেন যোগাযোগ করেন। সবুজ হোসেন তার সঙ্গে সাড়ে সাত লাখ টাকা চুক্তি করেন। সে সুবাদে সবুজ হোসেন দুই মাস আগে রাকিবুল ইকবালকে বাড়ি থেকে ঢাকায় কাফরুল থানার ইব্রাহীমপুরের ৩৮৯ নম্বর বাসার ভাড়া মেসে নিয়ে যান।গত সোমবার (৪ জানুয়ারি) সবুজ হোসেন বাড়িতে এসে রাকিবুল ইকবালের চাকরির নিয়োগপত্র দিয়ে চুক্তি মোতাবেক টাকা দাবি করেন। ওইদিন ঢাকা থেকে রাকিবুল ইকবালও তার বাড়িতে ফোন করে সবুজকে টাকা দিতে বলেছিলেন। এরপর রাকিবুলের বাবা সবুজকে দেড় লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ছয় লাখ টাকার জন্য সবুজ চাপ দিচ্ছিলেন।নিয়োগপত্র নিয়ে সন্দেহ থাকায় তিনি চাকরিতে যোগদানের পর বাকি টাকা দেবেন বলে সবুজকে জানিয়ে দেন। গত মঙ্গলবার সকালে সবুজ বাড়িতে এসে তার কাছে বাকি টাকা দিতে বলেন। পরে ঢাকা থেকে একব্যক্তি রাকিবুল অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে তাকে ফোনে জানান। খবর পেয়ে তার বড় ছেলে রুহুল আমিন ঢাকায় মেসে গিয়ে রাকিবুলের মরদেহ দেখতে পান।পুলিশ রুহুল আমিনকে জানিয়েছে, ভাড়া মেসে রাকিবুল ইকবালের ফাঁস লাগানো অবস্থা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ছেলে রাকিবুলের লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে। এ ঘটনার পর সবুজ আত্মগোপন করেছে। এ ঘটনায় রাকিবুলের পরিবার বদলগাছী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত হয়নি।অভিযুক্ত সবুজ হোসেনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে এই ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এমনকি তিনি কোথায় আছেন তা বলেননি।বদলগাছী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম খান বলেন, রাকিবুল ইকবাল মারা যাওয়ার ঘটনায় কাফরুল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। এ কারণে এখানে মামলা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিহতের পরিবারের পক্ষে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে।আব্বাস আলী/এমএএস/বিএ
Advertisement