জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে আইপিইউ’র ১৬৬ রাষ্ট্রের কোন প্রশ্ন নেই

বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইন্টার-পার্লামেন্টারী ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৬৬ সদস্য রাষ্ট্রের কোন প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছের আইপিইউ`র প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। শনিবার বিকেলে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, কোনো দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যাহত হলে আইপিইউ তার বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা পালন করে। যার সাক্ষ্য বহন করে আইপিইউতে বাংলাদেশের সদস্য পদ তিনবার (১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর, ১৯৮২ সালে সামরিক শাসন জারীর পর এবং ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনে দীর্ঘ মেয়াদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পর) স্থগিত হওয়ার মাধ্যমে।তিনি বলেন, বর্তমানে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সক্রিয় থাকার কারণে আইপিইউ-ভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত করেছে।সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আইপিইউ প্রায় ৬৫০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। এ সংগঠনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে বাংলাদেশের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে যা বাংলাদেশে বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্রের বিশাল স্বীকৃতি। এ বিজয় জাতীয় অর্জন, এটি দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে সকলের উচিৎ জাতীয় লক্ষ্য অর্জন ও বিজয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া।আইপিইউ’র প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আজ আঞ্চলিক পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ প্রায় একই সময় আইপিইউ ও সিপিএ’র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মানের। এ সকল সাফল্য জাতিসংঘে বাংলাদেশের ইমেজ আরও বাড়িয়ে দেবে।আইপিইউ’র নির্বাচনের আগে দু’একটি দেশ ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে বাংলাদেশের দু’একটি দল অংশগ্রহণ না করা প্রসঙ্গে আলোচনার জবাবে তিনি বলেন, আমাদের উত্তরে তারা সম্মত হয়েছেন যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অনিবার্য অংশ নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো দলবিশেষ অংশগ্রহণ না করলে গণতন্ত্র থেমে থাকতে পারে না। অন্য সকল দেশও এ বক্তব্যকে সমর্থন করে আমাদের ভোট দিয়েছে।আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে কোনে প্রশ্ন আসছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আইপিইউ এ বছর সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার ১২৫ বছর উদযাপন করেছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ আগামী বছর প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি পালন করবে। লীগ অব নেশনস প্রতিষ্ঠার সূত্র ধরে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। সে বিবেচনায় জাতিসংঘ ও লীগ অব নেশনসের চেয়েও পুরনো সংগঠন হচ্ছে আইপিইউ।আইপিইউ এই প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা নিয়েই নির্বাচিত হয়েছি। দেশ পরিচালনায় আমাদের প্রতি সারাবিশ্বের সমর্থন রয়েছে বলেই আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছি। বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে।তিনি বলেন, তবে সরকারের ধারাবাহিক সাফল্য বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্বের আসন দিচ্ছে। তিনি ব্যক্তিগত অভিমত তুলে ধরে বলেন, যদি লক্ষ্য স্থির হয় ও উদ্দেশ্য সৎ থাকে তবে সেখানে সাফল্য আসবেই।সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। দেশ স্বাধীন হয়েছে, ভাষা আন্দোলনে বিজয়ী হয়েছি, ভাষার মর্যাদা বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। সেই অগ্রযাত্রায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রথম সচিব (প্রেস) মামুন-অর-রশিদ উপস্থিত ছিলেন। নিউইয়র্কের জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে রোববার এক বার্তায় এ কথা বলা হয়। -বাসস

Advertisement