চট্টগ্রামের ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সার কারখানা থেকে যশোর বাফার গোডাউনে নেওয়ার সময় পথিমধ্যে আসল সার পাল্টে নকল সার সবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
এনিয়ে চট্টগ্রামে টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনে (বিসিআইসি) ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অভিযোগ তদন্তে টিএসপি কমপ্লেক্স ও ড্যাপ ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড পৃথক কমিটি গঠন করেছে। রোববার (২০ মার্চ) কমিটির সদস্যরা যশোর বাপার গোডাউন পরিদর্শন, সন্দেহভাজন ট্রাক থেকে সারের নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
জানা গেছে, যশোরে টিএসপি সার খালাসের সময় স্থানীয় সার ডিলারদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাফার গোডাউন ম্যানেজার সার খালাস বন্ধ করে দিলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
Advertisement
টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউল রহমান জাগো নিউজকে বলেন, যশোর বাফার গোডাউনে নকল সার সরবরাহের একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। সিনিয়র কেমিস্ট রেজাউল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি ইতোমধ্যে যশোরে গেছেন। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহের বিসিআইসি ডিলার মেসার্স মনি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুস সামাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে যে সার যশোর গোডাউনে নামানো হচ্ছে, সেগুলো আসল সার নয়। আমরা নিয়মিত যশোর বাফার গোডাউন থেকে সার নিই। এখন যে সারগুলো আনা হয়েছে, সেগুলোর বস্তার সেলাই টিএসপির সেলাইয়ের মতো নয়। এ সারগুলো পথে পাল্টে নকল সার ভর্তি করে বস্তাগুলো পুনরায় সেলাই করে বাফার গোডাউনে সরবরাহের জন্য আনা হয়েছিল। এখন খালাস আটকে দেওয়া হয়েছে।’
যশোর বাফার গোডাউনের ম্যানেজার আকতারুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত ১৭ মার্চ চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে পাঁচ ট্রাক সার আসে। পরিবহনকারী ঠিকাদার হলো মেসার্স সৈয়দ এন্টারপ্রাইজ। গোডাউনে সার খালাসের সময় সন্দেহ হলে খালাস বন্ধ করে দিই। বিষয়টি লিখিতভাবে বিসিআইসি ও টিএসপি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা কমিটি গঠন করেছেন। এখন কমিটি সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।’
জানা গেছে, যশোর ও ভোলা বাফার গোডাউনে ৯ হাজার টন টিএসপি সার পরিবহনের জন্য চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মাঝিরঘাটের পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স সৈয়দ এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয় টিএসপি কমপ্লেক্স। এরপর থেকে সার পরিবহন করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
কার্যাদেশের শর্তমতে, যশোরে প্রতিটন দুই হাজার ৬৬১ টাকা ৫০ পয়সা করে এবং ভোলায় প্রতি টন দুই হাজার ২১৪ টাকা ২৮ পয়সা করে পরিবহন ব্যয় (ভ্যাট ট্যাক্সসহ) নির্ধারিত রয়েছে।
জানতে চাইলে পরিবহনকারী ঠিকাদার মেসার্স সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আহসান হাবীবের দাবি এসব সার নকল না। রোববার রাতে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘যশোরে সন্দেহ হওয়ায় আমাদের পাঁচটি ট্রাক আটকানো হয়েছে। এখন তারা (বিসিআইসি) কমিটি করেছেন। কমিটি আজ (রোববার) নমুনা নিয়েছেন। এসব নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা করবেন।’
ইকবাল হোসেন/এএএইচ