বিনোদন

উন্নত চিকিৎসা চান বাউল সাধক পাগল বাচ্চু

‘ভালোবাসা যায় সকলকে বিশ্বাস করা যায় না/ মনের মত মনের মানুষ সকলে পায় না’- এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা বাউল কবি, সুরকার ও শিল্পী পাগল বাচ্চু ওরফে চাঁন শাহ।বাংলাদেশের লোকসংগীত তথা বাউল গানের অন্যতম সাধক তিনি। এখন আর জীবনের সেই জৌলুস নেই। ৭৬ বছরের এই সংগীত সাধক ভুগছেন বার্ধক্য জনিত নানাবিধ সমস্যায়। হাইপ্রেসার, শাসকষ্ট, হাপানী ও ডায়াবেটিকস রোগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার অদূরে উত্তরা দক্ষিণখান নদ্দাপাড়ায় নিজ নিবাসে শয্যাশায়ী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।একদিন তাকে ঘিরে মজমা জমত। তার জন্য অপেক্ষা করতো আসর। আর আজ ঘরে বসে একলাই দিন কাটে তার।বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তালিকাভুক্ত ও বাংলাদেশ বেতারে সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে তালিকাভূক্ত শিল্পী হিসেবে পালা গান ও সংগীত পরিবেশন করে আসছেন পাগল বাচ্চু। তার সৃষ্টি সুর এতই মধুর যে তাকে অনেকে বিচ্ছেদ গানের রাজা বলে হয়ে থাকেন।  স্বশিক্ষিত এই বাউল সাধক প্রায় এক হাজার গানের সুর ও সংগীতের স্রষ্ঠা। পাগল বাচ্চুর বিচ্ছেদ গান নামক ‘ছয় খন্ড গানের বই’ বাজারে বের হয়েছে। এছাড়া তিনি ‘জ্ঞানের আলো বাউল সংস্থা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সারা বাংলাদেশে তার হাজার হাজার গানের ছাত্র/ছাত্রী ও ভক্তবৃন্দ রয়েছে। যে ব্যক্তি বাংলাদেশের সংগীত জগতকে উন্মত শিখরে ও সমৃদ্ধি করেছে আজ তিনি অনাদরে বিছানায় শয্যাশায়ী; এটা বেদনা জাগায়। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু কোনো সহৃদয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকার আজ পর্যন্ত তার খোঁজ নিতে আসেনি। এ নিয়ে পরিবারের মানুষদের অনেক ক্ষোভ। তারা বলেন, জীবনে গান আর বাউলিপনা ছাড়া কিছুই করেননি তিনি। তার গান গেয়ে কতোজনে কতো কিছু করল। অথচ, স্রষ্টা মরছেন ধুকে ধুকে। তার পাশে দাঁড়ানোর মতো একটা মানুষও আজ পাওয়া যায় না। তারা আরো বলেন, এদেশে গুণীর কদর হয় মৃত্যুর পর। জীবদ্দশায় তেমনভাবে মূল্যায়িত হন না কেউ। এই স্বভাব জাতি হিসেবে লজ্জার। কেননা, গুণীর কদর সঠিক সময়েই করা উচিত।জীবনের এই পড়ন্ত বিকেলে এসে এই সংগীত পাগল মানুষটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংস্কৃতিমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট উন্নত চিকিৎসার আবেদন করেছেন।এনই/এলএ/আরআইপি

Advertisement