খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৩৫ টাকা কমে হয়েছে ৭৬০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা কমিয়ে ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (২০ মার্চ) সচিবালয়ে তেল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা, ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৭৯৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৪৩ টাকায়।
আগামীকাল থেকে মিলগেটে এই মূল্য কার্যকর হবে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে কার্যকর হতে আরও পাঁচ-ছয়দিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।
Advertisement
সচিব বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই দাম বহাল থাকবে। আমাদের রিফাইনারির সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। আমরা আবার মে মাসে বসবো, বসে আন্তর্জাতিক বাজার দেখে এক মাসের গড় নিয়ে মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হবে।’
তিনি বলেন, সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করতে সম্মত হয়েছি। পাম তেলের বিষয়ে আমাদের আরও কিছু তথ্য ও হিসাব নিকাশের দরকার আছে। পাম তেল ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আসে। সুতরাং আসতে সময় কম লাগে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে যে বর্ধিত দাম সেই তেল বাংলাদেশের বাজারে চলে এসেছে। সেটা কীভাবে সমন্বয় করা যায়, এটার জন্য রিফাইনারি সমিতি এবং প্রতিনিধি যারা ছিলেন, তারা সময় নিয়েছেন।
আগামী ২২ মার্চ বসে পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান বাণিজ্য সচিব।
বাজারে পর্যাপ্ত তেল পাওয়া যাচ্ছে দাবি করে বাণিজ্য সচিব বলেন, তেল পাওয়া যাচ্ছে না, এটা হয়তো ৮-১০ দিন আগে ছিল। তেল যথেষ্ট এসেছে। গত তিনদিন আগেও ৭৫ হাজার টন তেল এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। আমার জানা মতে এখন তেলের সংকট নেই। দামও কমে এসেছে এমনিতেও।
Advertisement
এখন থেকে উৎপাদকরা ভ্যাটের চালানের পাশাপাশি সাপ্লাই অর্ডারে (এসও) তেলের দাম লেখা থাকবে বলেও জানান তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি বলেন, তেলের দামের বিষয়ে আমাদের তদারকি থাকবে এবং রমজান মাস সামনে রেখে আমরা তদারকি আরও বাড়িয়েছি। তেলের ভ্যাট কমানোর কারণে আমরা আজকে দাম অনেকটা কমাতে পারলাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছিল। ইদানিং একটু কমেছে। সেটার প্রভাবে আসতে হয়তো আরও সময় লাগবে।
বাজারে যথেষ্ট সয়াবিন ও পামওয়েল আছে জানিয়ে তপন কান্তি বলেন, ‘ঈদ পর্যন্ত সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।’
এক কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে টিবিসির পণ্য দেওয়ার কারণে সাবসিডি অনেক বেড়ে যাবে জনিয়ে তিনি বলেন, আমরা রমজানে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য অন্যান্য বছর দিয়ে থাকি, এবার আমরা তা তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছি। আমরা টিসিবির অপারেশন এভাবে অব্যাহত রাখবো কি না, সেটাও চিন্তা করছি। আমরা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।
টিকে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মো. মোস্তফা হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, সবার সঙ্গে সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে একটা মূল্যতে আসলাম। ঈদ উপলক্ষে সবাই ডিউটি ভ্যাট আগের হারেই দিয়ে দিয়েছি। আমাদের খরচটা হয়ে গেছে। সরকার যে ভ্যাট কমিয়েছে সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম কমানোর চেষ্টা করেছি। ফলে আমরা যে বাড়তি ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়েছি ওটা যাতে আমাদের কোনোভাবে রিফান্ড করা যায়, এটার প্রতি সরকারকে নজর দিতে বলবো। তাহলে আমাদের লসটা হবে না।
পর্যাপ্ত তেল দেশে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি কোন ঘাটতি ঈদ পর্যন্ত হবে না।’
আরএমএম/এমএইচআর/জেআইএম