ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে জ্বালানির ওপর। কারণ একদিকে শুরু হয় সরবরাহ সংকট অন্যদিকে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যায়। তাছাড়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও ইউরোপে জ্বালানি বিশেষ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি দেয়।
Advertisement
রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই পথে হাঁটছে যুক্তরাজ্যও। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমাবিশ্ব। সর্বপরি রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যদিকে যুদ্ধ শুরুর পরই রাশিয়া থেকে সরাসরি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের কাজ স্থগিত করে জার্মানি।
জানা গেছে, ২০২০ সালে বিশ্বে মোট তিন হাজার ৮২২ দশমিক আট বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে ২০ শতাংশের বেশি অর্থাৎ ৮৩২ বিলিয়ন ঘনমিটার ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র। গ্যাসের ব্যবহারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটির বাৎসরিক গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ ৪১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ঘনমিটার। ৩৩০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ঘনমিটার ব্যবহার করে চীন রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে।
অন্যদিকে গ্যাস মজুতের দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ দেশ। এরপরেই রয়েছে ইরান ও কাতারের অবস্থান। ২০২০ সালে প্রাকৃতিক গ্যাস মজুতের অর্ধেকই করে এই তিনটি দেশ। এসময় রাশিয়ার মজুতের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৯৩৮ বিলিয়ন ঘনমিটার। ইরান ও কাতারের ছিল যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৭৭ বিলিয়ন ঘনমিটার ও ২৩ হাজার ৮৩১ বিলিয়ন ঘনমিটার।
Advertisement
গ্যাস মজুতে এরপরেই রয়েছে তুর্কমেনিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে দেশ দুইটির গ্যাস মজুতের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৫ হাজার ৩৬৫ বিলিয়ন ঘনমিটার ও ১২ হাজার ৯৫৮ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ঘনমিটার। সৌদি আরবে গ্যাস মজুত ছিল ৮ হাজার ৪৩৮ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ঘনমিটার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ছিল সাত হাজার ৭২৫ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ঘনমিটার।
তাছাড়া নাইজেরিয়ায় গ্যাস মজুতের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার ৭৪৯ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ঘনমিটার। ভেনিজুয়েলা ও আলজেরিয়ার রয়েছে যথক্রমে পাঁচ হাজার ৫৮৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ঘনমিটার ও চার হাজার ৫০৪ বিলিয়ন ঘনমিটার।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রুশ বাহিনী। গত ২০ দিনে তাদের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর। প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ আক্রমণের মুখে এরই মধ্যে ৩০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন।
এমএসএম/এএসএম
Advertisement