মাত্র একদিন আগেও অমর একুশের বইমেলা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হাজারো লেখক, পাঠক ও প্রকাশকের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল। কিন্তু বইমেলা শেষ হওয়ার একদিনের ব্যবধানে মেলা প্রাঙ্গণ এখন জনশূন্য এক বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। এরইমধ্যে বইপত্র সরিয়ে স্টলের অবকাঠামো ভেঙে নিয়ে গেছেন স্টল মালিকরা।
Advertisement
শনিবার (১৯ মার্চ) সরেজমিনে বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে উদ্যানজুড়ে সুনসান নীরবতা। ১৭ মার্চ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশপথে নিরাপত্তার জন্য পুলিশি প্রহরা থাকলেই এখন তা নেই। বইমেলা চলাকালীন নির্ধারিত সময় ছাড়া ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও এখন সে নিষেধাজ্ঞা নেই। উদ্যান জুড়ে ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। বিভিন্ন স্টল থেকে বই সরিয়ে নেওয়া হলেও স্টল নির্মাণে ব্যবহৃত কাঠ ও বাঁশ রয়ে গেছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনরত একাধিক আনসার সদস্য জানান, বইমেলার বিভিন্ন স্টলের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত কাঠ ও বাঁশ পুরোপুরি সরিয়ে নিতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তারা জানান, কিছু কিছু স্টল নির্মাণে স্টিলের ফ্রেম, ইট ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলো সরিয়ে নেওয়ার পর উদ্যান জুড়ে পড়ে থাকা ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার করা হবে। উদ্যানের পুরোনো রূপ ফিরে পেতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে যাবে বলে তারা জানান।
করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের কারণে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বইমেলার রেওয়াজ পাল্টে এ বছর শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। মাসাধিককালব্যাপী চলমান বইমেলা ১৭ মার্চ শেষ হয়। শুরুর দিকে বইমেলা জমবে কি না তা নিয়ে নানা শংকা থাকলেও পরে তা কেটে যায়। মেলা শুরুর কয়েকদিন পর থেকে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় বইমেলা জমে ওঠে।
Advertisement
বাংলা একাডেমির হিসাবে, এবার মেলায় মোট বই বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির বই বিক্রি হয়েছে এক কোটি ২৭ লাখ টাকার। যেখানে ২০২১ সালে মোট বই বিক্রি হয়েছিল মাত্র তিন কোটি টাকার। সেদিক থেকে এবারের মেলায় সাড়ে ১৭ গুণ বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
এবার মেলায় মোট বই প্রকাশ হয়েছে ৩ হাজার ৪১৬টি। এর মধ্যে ‘মানসম্পন্ন’ বই নির্বাচিত হয়েছে ৯০৯টি। যা পুরো বইয়ের ২৬ শতাংশ। ২০২০ সালে এ হার ছিল ১৫ শতাংশ।
এমইউ/কেএসআর/এমএস
Advertisement