জাতীয়

‘ত্বকী হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না, তা দেশের মানুষ বুঝতে পারে’

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার হবে বলে আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।

Advertisement

শুক্রবার (১৮ মার্চ) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আইভী বলেন, ত্বকী হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না, সেটা নারায়ণগঞ্জের লোকজনসহ গোটা দেশের লোকই বুঝতে পারে।

এই হত্যাকাণ্ডে প্রভাবশালী লোকজন জড়িত উল্লেখ করে আইভী বলেন, তাদের চলাফেরা, নিজেদের তারা এমনই মনে করে যে, রাষ্ট্রকেও তারা মানতে চায় না। রাষ্ট্র তাদের ভয় পায় কি না, তা জানি না। তা নাহলে কী এমন গোপন রহস্য যে, এই বাচ্চার (ত্বকী) হত্যাকারীর বিচার হবে না?

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনজরে থেকেই ত্বকী হত্যার বিচার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে থেকেই বিচারের ব্যবস্থা হবে। হয়তো সময়ের কিছু কারণে সেটা হচ্ছে না।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ত্বকী পাঠাগার থেকে বই আনার সময় আক্রান্ত হয়। এটা একটা প্রতীকীর মতো যে, আমাদের দেশে সংস্কৃতি চর্চা কেমন বিপদের মধ্যে আছে। সেজন্য আমাদের কর্তব্য হবে দেশে একটা সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করা।

ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিচার শুধু নয়, ত্বকীরা যেন নিরাপদে এখানে থাকতে পারে। ত্বকীরা যেন তাদের মেধা, প্রতিভা, সম্ভাবনা বিকশিত করতে পারে। এই সমাজ যেন মানবিক হয়।

অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ত্বকী হত্যার এক বছর পর ২০১৪ সালের ৫ মার্চ র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় মোট ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। চার্জশিট আমরা খুব শিগগির জমা দেব। সেই চার্জশিট আজও জমা দেওয়া হলো না।

Advertisement

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র কতটা নিষ্ঠুর, বর্বর হতে পারে তার প্রমাণ এই ত্বকী হত্যা। ১৪৬ বার ত্বকী হত্যার তারিখ ঘুরেছে, তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়ার জন্য। তারপরও তা দেওয়া হয়নি।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ত্বকী মঞ্চের সদস্য জিয়াউল ইসলাম কাজল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্বকীর মা রওনক রেহানা। এখানে আরও বক্তব্য রাখেন কবি হালিম আজাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঈশিতা ফারজানা প্রমুখ।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে ত্বকী নিখোঁজ হয়। ৮ মার্চ সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর খালে কুমুদিনীর পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় ২৮ মে ২০১৩ উচ্চ আদালতের নির্দেশে র‌্যাব এর তদন্তভার গ্রহণ করে।

এসএম/জেডএইচ/