আন্তর্জাতিক

নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের অস্তিত্ব মিলেছে চীনে

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রারম্ভিক জুরাসিক যুগের একটি নতুন প্রজাতির সাঁজোয়া ডাইনোসরের সন্ধান পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ই-লাইফ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে এমন তথ্য মিলেছে। খবর সিএনএনের।

Advertisement

চীনের ইউনান প্রদেশের ইউক্সি অঞ্চল ডাইনোসর আবিষ্কারের একটি হটস্পট। ২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা এখানে একটি সাঁজোয়া ডাইনোসরের নমুনা খুঁজে পান, যার নাম দেওয়া হয় ইউক্সিসারাস কোপচিকি।

এরপর ২০১৯ সালে সেখানে প্রাপ্ত নমুনার ওপর গবেষণা শুরু হয় বলে জানান ই-লাইফ জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধের লেখক যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শুন্ডং বি।

নিবন্ধের আরেক লেখক লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষক পল ব্যারেট বলেন, প্রাচীন এই প্রাণীটি থাইরিওফোরান শ্রেণিভুক্ত, যা অনেকটা এর নিকটবর্তী শ্রেণি স্টেগোসরাসের মতোই দেখতে।

Advertisement

গবেষণা নিবন্ধ অনুসারে, ডাইনোসরের নতুন এই প্রজাতিটি প্রথম থাইরিওফোরান শ্রেণিভুক্ত প্রাণী যা ১৭৪ থেকে ১৯২ মিলিয়ন বছর আগে এই অঞ্চলে বাস করতো।

এক ইমেইল বার্তায় ব্যারেট বলেন, সমগ্র এশিয়া মহাদেশে পরিচিত হওয়ার পর এটিই প্রথম প্রারম্ভিক যুগের সাঁজোয়া ডাইনোসর। এ থেকে ধারণা করা যায়, মাত্র কয়েক মিলিয়ন বছর আগে এই অঞ্চলে প্রজাতিটি আবির্ভাবের পরপরই দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইউক্সিসারাস কোপচিকি লম্বায় ৬.৬-৯.৮ ফুট (২-৩ মিটার) ছিল এবং এরা ফার্ন ও সাইক্যাডের মতো কম বর্ধনশীল উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকতো।

ব্যারেট বলেন, হাড়ের শক্ত আবরণ দিয়ে প্রাণীটির ঘাড়, পিঠ ও পা ঢাকা থাকতো, বর্মের উপরে ছিল বড় বড় কাঁটা। এই কাঁটা দিয়ে অনেকগুলো কাজ করতো প্রাণীটি। এর মধ্যে রয়েছে- শিকারের চোয়াল ও দাঁতকে বিচ্যুত করা।

নিজস্ব প্রজাতির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বিবাদের সময় ভয় দেখানোর হাতিয়ার হিসেবেও প্রাণীটি এই দাঁতগুলো ব্যবহার করতো বলে ধারণা করেন ব্যারেট।

Advertisement

এ বিষয়ে শুন্ডং বি বলেন, বর্তমানে সজারু ও হেজহগও এ রকম আচরণ করে থাকে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ১২০টিরও বেশি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। গবেষকরা সেখানে একটি নতুন প্রজাতির অস্তিত্ব নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট উপাদান পেয়েছেন।

দেহাবশেষের মধ্যে পাওয়া গেছে একটি একক কঙ্কালের একাধিক টুকরো, বর্ম প্লেটের অংশ, পা, চোয়াল ও মাথার খুলি। প্রাপ্ত নমুনার দানবীয় শরীর ও স্বতন্ত্র বর্ম গবেষকদের নিশ্চিত করেছে যে, এটি ডাইনোসরের একটি নতুন প্রজাতি।

বি আরও বলেন, এছাড়াও এই গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ডাইনোসর ছিল খুবই বৈচিত্র্যময় ও এরা খুব দ্রুত উত্তর গোলার্ধে ছড়িয়ে পড়েছিল।

এদিকে, ব্যারেট বলেন, সাঁজোয়া ডাইনোসরের নিকটতম প্রজাতি হলো তৃণভোজী স্কেলিডোসরাস ও ইমাউসরাস। উভয় প্রজাতিই জুরাসিক যুগে ইউরোপে আবির্ভূত হয়েছিল।

এমপি/এমএসএম/এমএস