সাহিত্যে মো. আমির হামজার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সরকার। খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদও পড়তে পারেন আমির হামজা।
Advertisement
গত মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করেছে। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন। এবার ‘সাহিত্যে’ মরহুম আমির হামজা রাষ্ট্রীয় এ সর্বোচ্চ পুরস্কার পাচ্ছেন।
তালিকা ঘোষণার পরই আমির হামজাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। খ্যাতিমান লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের বাইরে একেবারে অচেনা আমির হামজার সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া নিয়ে সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
মূলত জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকা চূড়ান্ত করে। এই কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘তার বিষয়ে আমরা নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেইনি। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি, তার কী কী সাহিত্যকর্ম আছে না আছে। যেগুলো আমাদের কাছে সাবমিট করা হয়েছে সেগুলো সঠিক কি না।’
‘এছাড়া মার্ডার-টার্ডারের বিষয়ও আসছে, সেগুলো দেখা হচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী নিয়ে ব্যস্ত আছি। এটা শেষ হোক, তারপর দেখা যাক কী হয়’ যোগ করেন মন্ত্রী।
২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ৮৭ বছর বয়সে আমির হামজা মারা গেছেন। বলা হচ্ছে, আমির হামজা একজন মরমী গায়ক। গান লিখেছেন, তার তিনটি বই প্রকাশিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালে মাগুরার শ্রীপুরের সারথি ফাউন্ডেশন থেকে ‘বাঘের থাবা’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়। পরে ২০১৯ সালে এই বইয়েরই গানের অংশ নিয়ে বের হয় আরেকটি বই, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’। এছাড়া ‘একুশের পাঁচালি’ নামেও তার একটি বই প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মূলত সরকারের উপসচিব মো. আসাদুজ্জামান তার সাহিত্যিক বাবার নাম স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছেন। এতে সমর্থন দিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
Advertisement
একই সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, প্রয়াত আমির হামজা মো. শাহাদাত হোসেন ফকির নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। ১৯৭৮ সালের ঘটনা এটা। ক্ষেতের ফসল খাওয়ার ঘটনা নিয়ে খুনের এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমির হামজা ও তার ভাইসহ মোট ছয়জনের কারাদণ্ড হয়। আট বছর জেল খাটার পর ১৯৯১ সালে মাগুরার এক মন্ত্রীর সহায়তায় বেরিয়ে আসেন আমির হামজা।
অপরদিকে কেউ কেউ আবার আমির হামজার পুরস্কার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা বলছেন, পাদ-প্রদীপের আলোর বাইরে থাকা কোনো নিভৃতচারী সাহিত্য সাধক রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়িত হলো।
আরএমএম/ইএ/জেআইএম