জোর করে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেছেন এক নারী। দলবদ্ধ ধর্ষণের পর গোয়ালন্দের উজানচরে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) জাগো নিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার আসামিরা হলেন-ওই নারীর সাবেক স্বামী মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার টুটিয়াম গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে আল-মামুন রশিদ (৩৮), বরিশাল বিমানবন্দর থানার গণপাড়া গ্রামের আব্দুল হাসেম মাঝির ছেলে আব্দুর রব মুন্না (৪৫), হাসু (৩৪) ও রিয়াজ (৩৫)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ওই নারীর সঙ্গে ২০১৮ সালে আল-মামুন রশিদের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এর আগে ২০১১ সালে এক সেনাসদস্যের সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বিয়ে হয়। ওই ঘরে ওই নারীর তিনটি সন্তান রয়েছে। পরে সেনাসদস্য অন্যত্র আরেকটি বিয়ে করায় কিছুদিন পর তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর আল-মামুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ওই নারী।
Advertisement
দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই তাকে মারধর করতেন রশিদ। এ ঘটনায় ২০২১ সালে মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু আদালতে একটি মামলা করেন ওই নারী। মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার গত বছরের ১৫ নভেম্বর তাকে তালাক দেন রশিদ।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে বাবার বাড়ি থেকে মানিকগঞ্জ ঘিওর থানার সিনজুরী গ্রামে ফুপুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন ওই নারী। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘিওর পাঁচ রাস্তার কাছে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছালে একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার থেকে নেমে সাবেক স্বামী আল-মামুনসহ গাড়িতে থাকা তার তিন বন্ধু মিলে জোর করে তুলে নেন। এসময় রিয়াজ নামের এক যুবক গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
কিছুক্ষণ পর ওই নারীকে কোমল পানির সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু পান করালে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর চলন্ত প্রাইভেটকারে পালাক্রমে আল-মামুন, আব্দুর রব মুন্না ও হাসু তাকে ধর্ষণ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের একটি ফাঁকা জায়গায় হাত-পা বেঁধে ওই নারীকে ফেলে দেন।
তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন। পরে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ বাহাদুরপুর কালুর মোড় এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে। রোববার (১৩ মার্চ) রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় চারজনকে আসামি করে ওই নারী একটি মামলা করেন।
Advertisement
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রুবেলুর রহমান/এসআর/এমএস