কৃষি ও প্রকৃতি

রাজবাড়ীতে বাদাম চাষ বেড়েছে

চলতি বছর রাজবাড়ী জেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ২৭৫ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। জেলায় সবেচেয়ে বেশি বাদাম চাষ হয়েছে রাজবাড়ী সদর ও পাংশায়।

Advertisement

স্বল্প খরচে বাদাম চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন রাজবাড়ীতে বাড়ছে বাদাম চাষ। এছাড়া অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদাম চাষে তেমন শ্রম দিতে হয় না। অন্যদিকে বাদামে রোগবালাই কম থাকায় কীটনাশক প্রয়োগের ঝামেলা কম। ফলন ভালো হতে মাঝে মধ্যে প্রয়োগ করতে হয় ছত্রাকনাশক ঔষধ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নদী তীরবর্তী এলাকার রাজবাড়ী সদরে ২০৫, পাংশায় ৪৫০, গোয়ালন্দে ৩১০ ও কালুখালীতে ১৬০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে।

শহরের রেলগেট এলাকায় ভ্যানে করে খুচরা বাদাম বিক্রেতা জমসেদ জানান, দিন দিন বাদামের চাহিদা বাড়ছে। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি ভ্যানে করে বাদাম বিক্রি করেন শহরের রেলগেট এলাকায়। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি ভাজা বাদাম বিক্রি করেন। এছাড়া ছোলা, ভুট্টা, বুট ভাজাও বিক্রি করেন।

Advertisement

বর্তমানে বাজার থেকে ভালো বাদাম ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে কিনে, তা প্রক্রিয়াজাত করে ভেজে খুচরা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এসময় ক্রেতারা ১০-২০ টাকাসহ বিভিন্ন দামে বাদাম কেনেন। কাঁচা বাদামের দাম আরও একটু কম হলে তারা একটু লাভবান হতেন।

ভ্রাম্যমাণ খুচরা বাদ বিক্রেতা কর্ণ কুন্ডু জানান, তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে ঝুড়িতে করে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন। এ বাদাম বিক্রি করেই চলে তার ৪ জনের সংসার। বর্তমানে কাঁচা বাদামের দাম বেশি হওয়ায় লাভ একটু কম হচ্ছে।

কৃষক খলিল মন্ডল জানান, তিনি অনেক বছর ধরে বাদাম চাষ করে আসছেন। খরচের তুলনায় বাদাম চাষে লাভজনক। তবে অনাবৃষ্টি ও বর্ষায় নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন।

কৃষক সালাম খান জানান, চরের উর্বর মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। মৌসুমের শুরুতে তারা বীজ বপন করেন। এছাড়া তেমন কোনো খরচ নাই। ভালোভাবে পরিচর্যা ও কীটনাশক দিলে বিঘায় ১২ মণ পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে।

Advertisement

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম শহীদ নুর আকবর বলেন, এবার বিনা মূল্যে কৃষকদের মাঝে জেলায় ১২ টন বাদামের বীজ দিয়েছেন।

এ জেলায় বিনা চিনা বাদাম ৪ ও ১০ এবং বাড়ি চিনা বাদাম ৮ চাষ বেশি হয়। ফলনও ভালো হয়। বাদামের দাম ভালো হওয়ায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭৫ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৫০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে।

রুবেলুর রহমান/এমএমএফ/জিকেএস