স্কুলের শিক্ষকরা প্রায়ই শাস্তিস্বরূপ শিক্ষার্থীকে কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার আদেশ দেন। শিশু-কিশোরদের জন্য বিষয়টি সহজ হলেও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কিছুটা কঠিন। কারণ সবার পক্ষে কিন্তু এক পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।
Advertisement
তবে যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন কিংবা শারীরিকভাবে একদমই ফিট তাদের জন্য বিষয়টি হতে পারে সহজ। এক পায়ে দাঁড়ানোও কিন্তু একটি শরীরচর্চা। যা খুব সহজেই যে কোনো স্থানে যে কোনো কাজের ফাঁকেই আপনি করতে পারবেন।
একই সঙ্গে এক পায়ে দাঁড়ানোর মাধ্যমে আপনার কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যেরও পরীক্ষা করতে পারবেন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য এক পায়ে দাঁড়াতে পারলে বুঝতে হবে আপনার হৃদযন্ত্রসহ সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো আছে।
গবেষণায় ৮৪১ জন নারী ও ৫৪৬ জন পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। যাদের গড় বয়স ছিল ৬৭ বছর। এক পায়ে দাঁড়ানোর সময় তারা চোখ খোলা রেখেছিলেন। তাদের পা উঁচু করে রাখার সর্বোচ্চ সময় ছিল ৬০ সেকেন্ড।
Advertisement
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা যারা তাদের ভারসাম্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল তাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি ছিল। তাই এই ভঙ্গির মাধ্যমে খুব সহজেই কিন্তু আপনি হৃদযন্ত্রের সুস্থতার পরীক্ষা করতে পারবেন।
গবেষণার প্রধান লেখক এবং কিয়োটো ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব মেডিসিনের সেন্টার ফর জেনোমিক মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ইয়াসুহারু তাবারার বলেন, ‘এক পায়ে ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।’
‘এক পায়ে দাঁড়াতে যাদের সমস্যা হয় তাদের মধ্যে মস্তিষ্কের রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেশি।’ তাবারা আরও জানান, ‘হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে কি না তা নির্ধারণ করার একটি সহজ উপায় হলো এই পরীক্ষা।’
এক পায়ে দাঁড়ানোর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। এটি ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করে। এক পায়ে অবস্থানের কারণে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।
Advertisement
যা মানসিক ব্যাধি প্রতিরোধ করে। যারা এক পায়ে দাঁড়াতে সংগ্রাম করে তাদের ছোট রক্তনালির ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে ও তাদের জ্ঞানীয় স্কোরও কম হয়।
এক পায়ে দাঁড়ানোর অভ্যাস আপনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। এই ভঙ্গির কারণে আপনার কাঁধ প্রশস্ত হবে ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো আছে কি না তাও জানা যায় এক পায়ে দাঁড়ানোর মাধ্যমে। যদি আপনি একেবারেই এ ভঙ্গিতে দাঁড়াতে না পারেন কিংবা ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারে তাহলে পারকিনসন্স রোগের ঝুঁকিও থাকতে পারে।
সূত্র: ব্রাইট সাইড/হার্ট.অর্গ/ফ্রাইডে ম্যাগাজিন
জেএমএস/এমএস