নাটোরের লালপুরে প্রেমঘটিত কারণে জুয়েল হোসেন (২৮) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Advertisement
শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানান নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-লালপুর উপজেলার দিলালপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (২৮), একই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে মেহেদি হাসান লিটন (২০) এবং জিয়ারুল ইসলামের ছেলে মেহেদি হাসান।
গত ৪ মার্চ সকালে দিলালপুর গ্রামের নিজ বাড়ির পেছনে একটি মাঠে মুমূর্ষু অবস্থায় জুয়েলকে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জুয়েলের বাবা দিলালপুর গ্রামের সাকিম প্রামাণিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা করেন।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, সেলিনা খাতুনের সঙ্গে ভাতিজা জুয়েল হোসেনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে জুয়েল ও সেলিনা খাতুনকে শাসন করা হয়। জুয়েলকে সেলিনা খাতুনের বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু নিষেধ না মেনে জুয়েল যাতায়াত করতে থাকলে সেলিনার সৎ ছেলে মেহেদি ক্ষিপ্ত হন এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
অন্যদিকে মেহেদি হাসান লিটনের আপন বড় ভাই সুমন সেলিনার ঘরে ঢোকেন। সেলিনা সুমনকে আটক করেন। পরে সালিশ বৈঠকে সুমনের সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এতে লিটন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেলিনা খাতুনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে সেলিনা খাতুন, মেহেদি হাসান লিটন এবং মেহেদি হাসান পরস্পর যোগসাজশে জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী সেলিনা জুয়েলকে ডেকে নিয়ে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট বলে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। এরপর জুয়েল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে পার্শ্ববর্তী মাঠে নিয়ে সেলিনা রেখে আসেন। পরে মেহেদি হাসান লিটন ও মেহেদি হাসান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে জুয়েলকে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় প্রথমে সেলিনা খাতুন ও মেহেদি হাসান লিটনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মেহেদি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র চাকু ও মোটরসাইকেলের ডিস্ক দিয়ে তৈরি করা কুড়াল ও মোবাইলের সিম উদ্ধার করে পুলিশ।
Advertisement
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, আসামিদের ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে পাঠানো হবে।
রেজাউল করিম রেজা/এসআর/এএসএম