আইন-আদালত

অগ্রণী ব্যাংকের আইনজীবী নিয়োগে ব্যাংক ড্রাফট নিয়ে রুল

মামলা পরিচালনায় তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের মেয়াদ বাড়ানো এবং নতুন আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে ব্যাংক ড্রাফটের শর্তে টাকার বিধান কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম মো. শাহীন। আদালতের আইনজীবী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের রিটের পক্ষে শুনানিতেও ছিলেন আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন নিজেই।

গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রথমে ২০ জানুয়ারি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।

Advertisement

নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে শর্তটি বাতিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (লিটিগেশন-১ অধিশাখা) উপসচিব, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও এবং উপ-মহাব্যবস্থাপককে (সদস্য সচিব, আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ কমিটি) বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই নোটিশের পর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এই রিট করা হয়।

জানা গেছে, গত ২ জানুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের ওয়েসাইটে ‘অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডে তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের আরও দুই বছর মেয়াদে নবায়ন এবং নতুন আইনজীবী দুই বছর মেয়াদে তালিকাভুক্তকরণের নিমিত্তে দরখাস্ত আহ্বান প্রসঙ্গে’ শিরোনামে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও প্রচার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবীদের মেয়াদ নবায়ন এবং নতুনভাবে তালিকাভুক্ত করার লক্ষ্যে আইনজীবীদের কাছ থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দরখাস্ত আহ্বান করা হয়।

দরখাস্ত আবেদনের শর্তাবলির মধ্যে একটি বিশেষ শর্তের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষিত হয়। যেখানে বলা হয়েছে- প্রত্যেক আবেদনকারীকে আবেদনপত্রের সঙ্গে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, ল’ ডিভিশনের অনুকূলে এক হাজার টাকার পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট (অফেরতযোগ্য) সংযোজন করতে হবে।

Advertisement

সরকারি-বেসরকারি কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পক্ষে বা বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবীদের কাছ থেকে সার্ভিস নিয়ে থাকে। মামলা পরিচালনার সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনজীবীদের তালিকা তৈরি থাকে, যা ব্যাংকে কোনো আনুষ্ঠানিক নিয়োগ নয়। যে কারণে ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার শর্তাবলির মধ্যে পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট সংযোজনের বিষয়টি নিতান্তই দুঃখজনক, যা কেবল আইনগতভাবে অবৈধই নয় বরং আইনজীবীদের জন্য অবমাননাকরও বটে।

কোনো মামলা বা আইনগত কাজে নিয়োজিত বা নির্দেশিত হওয়ার জন্য আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক ক্লায়েন্টের প্রতি যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন সম্মানজনক আইনপেশার দীর্ঘস্থায়ী প্রথা এবং আইনজীবীদের পেশাগত আচরণবিধি তথা আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।

এমতাবস্থায় নোটিশপ্রাপ্তির তিনদিনের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকে তালিকাভুক্ত আইনজীবী হওয়ার শর্তাবলি থেকে এক হাজার টাকার পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট সংযুক্তির শর্তটি বাতিল করে সংশোধিত আইনজীবী তালিকাভুক্তির বিজ্ঞপ্তি পুনরায় প্রকাশ করতে এবং এরই মধ্যে আবেদন করা আইনজীবীদের পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট বাবদ নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলা হয়।

এফএইচ/বিএ/জিকেএস