গ্রামপুলিশের চাকরির বেতন দিয়েই দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন জয়পুরহাটের সাজেদা বেগম। এক মেয়ে চিকিৎসক আরেক মেয়ে প্রকৌশল হয়েছেন। মুগ্ধ হয়ে জীবনযুদ্ধে জয়ী এ মাকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা পুলিশ।
Advertisement
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাজেদা বেগমের হাতে ক্রেস্ট ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন পুলিশ সুপার মাসুম আহম্মদ ভূঞা।
২০০৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে দায়িত্ব পালনের সময় দুর্বৃত্তরা গলা কেটে হত্যা করে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ফাঁসিতলা এলাকার গ্রামপুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল সরদারকে।
স্বামীর মৃত্যুর পর দুই মেয়ে মুর্শিদা পারভিন জলি ও খুর্শিদা পারভিন পলিকে নিয়ে মহাবিপদে পড়েন সাজেদা বেগম। পরে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গ্রামপুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন।
Advertisement
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, স্বামীর মৃত্যুর পর দুই মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তখন সাজেদা বেগমের স্বামী আব্দুল জলিলের পরিচিত এক পুলিশ সদস্য লোকমান হাকিম দুই মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
বড় মেয়ে মুর্শিদা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। ২০১৪ সালে একটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে স্বাস্থ্য ক্যাডারে উর্ত্তীণ হয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। ছোট মেয়ে খুর্শিদাও এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন এবং রুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন।
পুলিশ সুপার মাসুম আহম্মদ ভূঞা বলেন, সরকার নারীশিক্ষা ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীর উন্নতি ছাড়া সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সাজেদা বেগম যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা সমাজের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাঁচবিবি সার্কেল) ইশতিয়াক আলম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শাম্মীম আজিজ সাজ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি মাহবুবা সরকার, হৈমন্তী সরকার, আইরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
রাশেদুজ্জামান/এসআর/জেআইএম