বিভিন্ন স্বাদের ক্যান্ডি বার সবাই কমবেশি খান! বিশেষ করে শিশুরা তো ক্যান্ডি ছাড়া একদিনও থাকতে পারে না। শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও কিন্তু ক্যান্ডিপ্রিয়। তবে কখনো কি শুনেছেন,গরুর রক্ত দিয়েও তৈরি হয় ক্যান্ডি! নিশ্চয়ই ক্যান্ডি খাওয়ার প্রতি লোভ দূরে পালিয়েছে, একথা জেনে!
Advertisement
বলছি রাশিয়ার বিখ্যাত হেমাটোজেন বা জেমাটোজেন নামক পুষ্টিকর ক্যান্ডি বারের কথা। এই ক্যান্ডি তৈরিতেই ব্যবহৃত হয় গরুর রক্ত। জানা যায় রক্ত স্বল্পতা, অপুষ্টি ও ক্লান্তির চিকিৎসায় এই ক্যান্ডি খুবই কার্যকরী। সোভিয়েত আমলে এই ক্যান্ডির সূচনা ঘটে।
এ কারণে ওই আমল থেকেই শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ই খাওয়া শুরু করে এই ক্যান্ডি। এক সময় এই ক্যান্ডি শুধু ফার্মেসিতে জনসাধারণের কাছে বিক্রি করা হলেও পরে হেমাটোজেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মতো প্রাক্তন সোভিয়েত দেশগুলোতেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পর্যন্তও পৌঁছে গেছে জনপ্রিয় এই ক্যান্ডি বার। এমনকি আপনি আমাজনে অর্ডার করেও কিনতে পারেন হেমাটোজেন ক্যান্ডি বার।
Advertisement
আরবিটিএইচ অনুসারে, হেমাটোজেনের প্রথম সংস্করণটি ১৮৯০ সালে সুইজারল্যান্ডে তৈরি হয়েছিল। তখন এটি তৈরি হত গরুর রক্ত ও ডিমের কুসুমের মিশ্রণ দিয়ে। যার নাম ছিল গোমেলের হেমাটোজেন।
তবে ১৯২০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন এর সঙ্গে মিষ্টতা ও চকলেটের স্বাদ মিশ্রিত করেন। যা শিশুরাও খেতে পছন্দ করত। হেমাটোজেন চকলেট তৈরি করতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে।
কনডেন্সড মিল্ক, চিনি, গ্লুকোজ সিরাপ ও ভ্যানিলার মেশানো হয় এটি তৈরিতে। তারপর মিশ্রণটিকে ঠান্ডা করার জন্য রেখে দেওয়া হয়। তারপর মেশানো হয় গরুর রক্ত। পরের দিন ক্যান্ডি বারে ঢালাই করা হয়।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, সোভিয়েত রাশিয়ার বেশিরভাগ লোকেরা খুব ভালোভাবে জানত যে হেমাটোজেন বারে গরুর রক্ত থাকে। তবে এতে তাদের কোনো সমস্যা ছিল না।
Advertisement
আয়রন-সমৃদ্ধ এই ক্যান্ডি বার সুস্বাদু হওয়ায় ছোট-বড় সবাই চেটেপুটে খাওয়া শুরু করে। শিশু ও গর্ভবতী নারীর রক্ত স্বল্পতার চিকিৎসার পাশাপাশি আহত সৈন্যদের পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াতে সাহায্য করত এই ক্যান্ডি বার।
সোভিয়েত আমলেও হেমাটোজেন বার আজও জনপ্রিয় রাশিয়া, ইউক্রেনের মতো অন্যান্য প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশগুলোতে। তবে বর্তমানে এই ক্যান্ডি প্রস্তুতকারীরা গরুর তরল রক্তের বদলে গুঁড়া রক্ত ব্যবহার করেন। তবে স্বাদ নাকি একই আছে!
সূত্র: অডিটি সেন্টাল/ভাইস/অ্যাটলাস অবসকিউর
জেএমএস/এমএস