লাইফস্টাইল

অদ্ভুত রোগ! খাবার খেলেই কাঁদেন রোগী

এক চীনা ব্যক্তি সম্প্রতি ‘ক্রোকোডাইল টিয়ার সিনড্রোম’ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এটি বিরল এক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেখনই খান; তখনই চোখ দিয়ে পানি পড়ে।

Advertisement

হাসি-কান্না সাধারণত মানুষের অনুভূতির মাধ্যমে প্রকাশ পায়। দুঃখ, ব্যথা বা যন্ত্রণার কারণে স্বভাবতই মানুষ কান্না করে। তবে খাওয়ার সঙ্গে কান্নার কী সম্পর্ক থাকতে পারে?

সম্প্রতি মি. ঝাং নামের একজন বয়স্ক ব্যক্তি খাওয়ার সময় হঠাৎই কাঁদতে শুরু করেন। তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি কী কারণে তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। এর ফলে তিনি ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খেতে পারেন না।

ফলে ঝাং এরপর থেকে জনসমক্ষে খাওয়া এড়াতে শুরু করেন। মানুষের সামনে চোখের জল গড়িয়ে পড়ার ভয়ে, তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তবে তিনি বুঝতে পারেন যে, এটি এমন কিছু নয় যা তিনি লুকিয়ে রাখবেন।

Advertisement

তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত মাসে, ঝাং তার চেকআপের জন্য উহানের একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এরপরই জানান যায় তিনি বিরল এক রোগ ‘ক্রোকোডাইল টিয়ার সিনড্রোমে’ আ্রকান্ত।

ওই হাসপাতালের চক্ষুবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা. চেং মিয়াঁ চিন ব্যাখ্যা করেছেন, এই রোগের কারণ হলো তার মুখের পক্ষাঘাত। মুখের পক্ষাঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াটি ল্যাক্রিমাল গ্রন্থিগুলোর কার্যকলাপকে প্রভাবিত করেছিল।

বিশেষ করে তার বাম চোখে। পক্ষাঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের সময়, মুখের স্নায়ু তন্তুগুলো ভুল নির্দেশিত হয়ে যায় ও লালা নার্ভ সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থির পরিবর্তে ল্যাক্রিমাল গ্রন্থিকে প্রবেশ করে।

এই মুখের স্নায়ুর ভুল নির্দেশনার কারণেই বিভিন্ন উদ্দীপনা যেমন- খাবারের গন্ধ বা স্বাদ, লালা সৃষ্টি করার পরিবর্তে, অশ্রু গ্রন্থিকে উত্তেজিত করে অশ্রু তৈরি করে।

Advertisement

ক্রোকোডাইল টিয়ার সিনড্রোমের লক্ষণ একেজন রোগীর শরীরে ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। হালকা কেসগুলো সাধারণত কাউন্সেলিং ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সমাধান করা যায়।

তবে গুরুতর ক্ষেত্রে, সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা হলো ল্যাক্রিমাল গ্রন্থিতে বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন। যাতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রন্থিতে অযৌক্তিকভাবে পুনরুত্থিত নার্ভ ফাইবারগুলোর সঙ্গে সংক্রমণ বন্ধ করা যায়। টক্সিনের প্রভাব প্রায় ৬ মাস স্থায়ী হয়।

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমেও এমন সমস্যার সমাধান করা যায়। এ কারণে মি ঝাং এই বিকল্পটিই গ্রহণ করেন। বর্তমানে তার অবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তবে এ সমস্যা থেকে স্থায়ী পরিত্রান মিলবে কি না তা এখনো সুস্পষ্ট নয়।

সূত্র: সায়েন্স ডেইলি/ অডিটি সেন্ট্রাল

জেএমএস/এমএস