বান্দরবানে কোনো প্রকার রাসায়নিক ও কীটনাশক ছাড়া চীনা বাদামের ব্যাপক ফলন পেয়েছেন চাষিরা। সম্প্রতি সরেজমিনে জেলা সদরের সাইংগ্যা ও কেচিং ঘাটা সাঙ্গু নদীর চর এলাকা ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
Advertisement
সাইংগ্যা এলাকার বাদাম চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, রাসায়নিক ও কীটনাশক ছাড়াই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শুধু মাত্র বাদাম বীজ রোপণ করেই প্রতি বছর তিনি চীনা বাদামের চাষ করেন। এবারও সাঙ্গু নদীর চর এলাকায় নিজের পাঁচ একর জমিতে চীনা বাদাম চাষ করেছেন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খুব ভালো ফলন হয়েছে। একর প্রতি ৩০ থেকে ৪০ মণ বাদামের ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
এখন আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও পরিবারের সবাই মিলে আনন্দে জমি থেকে বাদাম সংগ্রহ করছেন। তিনি আরও জানান, কাঁচা বাদামের কেজি পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা দরে পাইকাররা বাড়ি থেকেই নিয়ে যাচ্ছেন। এতে চলতি মৌসুমে কয়েক লাখ টাকা আয় হবে বলে জানান তিনি।
Advertisement
ক্যাচিং ঘাটা এলাকার আরেক বাদাম চাষি উচনু মারমা জানান, তিনিও কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ছাড়া প্রতিবছর দেশীয় পদ্ধতিতে চীনা বাদাম চাষ করেন।
এবছর অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢ়ল ( বন্যা) না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দেশীয় চীনা বাদামের চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। তিনিও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে জমি থেকে বাদাম সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, জেলার সাঙ্গু নদীর চর এলাকা পলি সমৃদ্ধ হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে বাদামের ফলন বেশ ভালো পাওয়া যায়। জেলায় মূলত ২টি জাতের দেশীয় চীনা বাদাম চাষ করেন চাষিরা। এ বাদামের একটি দুই দানা অপরটি তিন দানা।
তিন দানা বাদাম চাষে বেশি আগ্রহ চাষিদের। দুই দানা বাদাম হেক্টর প্রতি ২ দশমিক ২ থেকে ৪ মেট্রিক টন, তিন দানাটি ২ দশমিক ৭ থেকে ৮ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। বাদাম তৈল জাতীয় ফসল হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ জেলা থেকে বাদাম সংগ্রহ করে তৈল উৎপাদন করে। এ ছাড়া বিদেশেও রপ্তানি হয় এই জেলার চীনা বাদাম।
Advertisement
এ জেলার বাদাম সম্পূর্ণ রাসায়নিকমুক্ত হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি করে ভবিষ্যতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক।
নয়ন চক্রবর্তী/এমএমএফ/এমএস