ইউক্রেন-রাশিয়া চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জাহাজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছে নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)। পাশাপাশি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফকে ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
Advertisement
শুক্রবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর স্ট্যান্ড রোডের সংগঠনটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাহাজটির নাবিকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএমওএর সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি অলভিয়া বন্দরকে যুদ্ধকবলিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে জয়েন্ট ওয়ার কমিটি। ওই ঘোষণার পরেও কেন জাহাজটিকে সেখানে পাঠানো হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির নেতারা। তারা বলেছেন, যুদ্ধকবলিত অঞ্চল ঘোষণার পরেও কেন ২২ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে।
চার্টার পার্টি বিধিমালা অনুযায়ী কোনো জাহাজ কোম্পানি নিরাপত্তার জন্য তার জাহাজটি যুদ্ধকবলিত এবং জলদস্যুপ্রবণ এলাকাতে গমনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের পক্ষ থেকে জাহাজটিকে কেন যুদ্ধকবলিত এলাকায় গমনের অনুমতি দিল তা বোধগম্য নয়। অথচ জাহাজটি ইউক্রেনে যাওয়ার বিষয়টি এড়ানো যেতো। মূলত বিএসসির সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের একজন মেধাবী মেরিন প্রকৌশলীর মৃত্যু ঘটেছে। অন্য নাবিকরাও জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে, রাষ্ট্রীয় মূলবান সম্পত্তি বাংলার সমৃদ্ধির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, এর দায় কে নেবে?।
Advertisement
জানা যায়, বিএসসির মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ডেনিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায়। অলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে অলভিয়া বন্দরে আটকাপড়ে জাহাজটি। এরপর গত বুধবার রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যায়। তবে, অন্য ২৮ জনকে বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় জাহাজ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসসি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপরি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম জিলানি, মো. ইফতেখার আলম, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. ওমর ফারুক তুহিনের মা মোছাম্মৎ খায়রুন নেছা, মামা ক্যাপ্টেন এ এফ এম জহির উদ্দিন এবং ছোট ভাই ওমর শরীফ উপস্থিত ছিলেন।
ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/জেআইএম
Advertisement