প্রবাস

বাংলাদেশ থেকে আরও শান্তিরক্ষী নিতে চায় জাতিসংঘ

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সহায়তা চেয়েছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ আরও অধিক পরিমাণ শান্তিরক্ষী সরবরাহ করবে বলে প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

Advertisement

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। মঙ্গলবার (১ মার্চ) এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মহাসচিব শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

এতে জানানো হয়, জাতিসংঘের মহাসচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট ও এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের এসব নাগরিকদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন ও সব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন।

Advertisement

১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন মহাসচিব। জোরর্পূবক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের কথা আবারও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরর্দশী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন গুতেরেজ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে আরও সাফল্য অর্জন করবে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের উচ্চ পর্যায়ের পদে ও বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনে মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি পদে আরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক নিয়োগের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইউক্রেন সংকটজনিত কারণে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও এ বৈঠকের সুযোগ দেওয়ার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

Advertisement

এর আগে মন্ত্রী বর্তমানে নিউইর্য়কে সফররত মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের নব-নিযুক্ত বিশেষ দূত ড. নোলিন হাইজারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক দেশগুলোসহ সব অংশীজনদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করতে বিশেষ দূতকে অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে এমন একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে নিজভূমিতে ফিরে যেতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কভিডের বিস্তার রোধ ও রোহিঙ্গা শিশুদের মিয়ানমারের কারিকুলাম-ভিত্তিক শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা বিশেষ দূতকে অবহিত করেন মন্ত্রী।

ভাষানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য নতুন আবাসন তৈরির কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেখানে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গারা জীবিকা নির্বাহের কাজে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ পাবে। স্বদেশে ফেরার তেমন কোনো আশা নেই দেখে রোহিঙ্গারা ক্রমশঃ অবৈধ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি হেইজারকে শিগগির কক্সবাজার ক্যাম্প ও ভাষানচর পরির্দশনের আমন্ত্রণ জানান।

বিশেষ দূত মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও তার সহানুভূতি ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি তার সর্বোচ্চ এজেন্ডা ও যত শিগগির সম্ভব এ সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি আঞ্চলিক দেশসমূহ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, রোহিঙ্গা নেতা ও মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষসহ সব অংশীজনদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত থাকবেন।

উভয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফের্য়াস ড. মো. মনোয়ার হোসেন। সূত্র: বাসস

এমআইএইচ/এমআরএম/এএসএম