বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বিকে নির্যাতনকারী এসআই মাসুদ শিকদারের গ্রামে বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের সোয়াইতপুর এলাকায়। এই গ্রামের মানুষও তার এবং তার ভাইদের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষুব্ধ। তাদের দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহারে এলাকার মানুষ তটস্থ হয়ে থাকেন সব সময়। এক সময় পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল থাকলেও পুলিশে চাকরির সুবাধে এখন স্বচ্ছল পরিবার হিসেবে এলাকায় পরিচিত। গ্রামের বাড়িতে টিনশেড ঘর থাকলেও সোয়াইতপুর বাজারে রয়েছে একটি বিশাল বাউন্ডারি করা বাসা। ছুটিতে বাড়িতে আসলে সেই বাসা থেকে বসেই এলাকায় রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করেন তিনি। পুলিশের উপ-পরিদর্শক হওয়ায় এলাকার মানুষ তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায়না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, উঠতি বয়সের যুবকদের নিয়ে মাসুদ শিকদারের একটি শক্তিশালী বাহিনী আছে। সেই বাহিনীর যুবকদের দিয়ে ঢাকায় চাঁদাবাজি করারও অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছুটিতে বাড়ি আসলে সেই বাহিনীর সঙ্গে আরও যোগ হয় উপজেলা শহরের ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ। এরপর সারারাত সোয়াইতপুর বাজারের বাসায় চলে রমরমা মাদকের আড্ডা ও বেচাকেনা। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীকে মানুষ বলে পাত্তা দেন না তিনি। কৃষক পরিবারের জন্ম নেয়া মাসুদ শিকদাদের এলাকায় চলাফেরা ও উঠতি বয়সের যুবকদের মাঝে টাকা পয়সা ছড়ানো দেখে মনে হয় কোটিপতির ঘরে জন্ম তার। নাম না প্রকাশ করার শর্তে সোয়াইতপুর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মাসুদ শিকদারের ভাই দম্ভোক্তি করে বলছে, আমার ভাইয়ের কিছুই হবে না। তাকে ক্লোজড করা হয়েছে মিডিয়াকে দেখানোর জন্য। তার হাত অনেক বড় লম্বা। কয়েকদিন পর সব আগের মতো হয়ে যাবে। সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে সোয়াইতপুর গ্রামের মরহুম সিরাজ আলী শিকাদারের ছেলে এসআই মাসুদ শিকদার এলাকায় আব্দুল্লা নামে পরিচিত। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগদান করে প্রায় ১৪ বছর আগে বিবাহ করেন পাশ্ববর্তী সোয়াইতপুর পূর্বপাড়া গ্রামে ডাকাত সর্দার হিসেবে পরিচিত আনসার ডাকাতের মেয়ে রুমাকে। সেই থেকে মাসুদ শিকদারের উত্থান। এসআই মাসুদ শিকদারের বাবা মরহুম সিরাজ আলী শিকদার বিবাহ করেন ৩টি। প্রথম স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেয় এক ছেলেসহ তিন মেয়ে। সবার ছোট স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেয় মাসুদ শিকদারসহ তিন ভাই। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে কোনো সন্তান হয়নি। ছোট স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে সবার বড় মাসুদ শিকদার পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি নেন।ছোট ভাই স্থানীয় পার্কে চাকরি করেন।আরেক ভাই মালদ্বীপ প্রবাসী। ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বিকে নির্যাতন ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারেন এলাকাবাসী। এ ঘটনা জানাজানির পর থেকে সোয়াইতপুর গ্রামসহ গোটা উপজেলা জুড়েই ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেছেন।খোকন/এমএএস/আরআইপি
Advertisement