ধর্ম

পরকালে কারা সফল হবেন?

দুনিয়ার এ জীবন ক্ষণস্থায়ী। এ জীবনই শেষ নয় বরং মৃত্যুর পর মানুষের জন্য রয়েছে অনন্তকালের এক জীবন। যার নাম পরকাল। পরকালের সূচনালগ্নে মানুষকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। যেখানে মানুষের দুনিয়ার জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। সেখানে করা সফল হবে?

Advertisement

দুনিয়ার এ জীবনের সব কাজের হিসাব হবে। হিসাব-নিকাশের পর জান্নাত কিংবা জাহান্নাম হবে সবার আবাসস্থল। এটাই হল আখেরাত বা পরকাল। এটি অনন্তজীবন। যে জীবনের কোনো শেষ নেই। এ জীবনে যারা সফল হবেন, তাদের সম্পর্কে কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছে এভাবে-

وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ

‘অবশ্যই কেয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই পাবে সফলতা।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

Advertisement

দুনিয়ার এ ক্ষণস্থায়ী জীবনকে পরকালের কল্যাণে কাজে লাগাতে মহান আল্লাহ মানুষকে মৃত্যুর কথা স্মরণ ও দুনিয়াকে ধোঁকার স্থান হিসেবে উল্লেখ করে এভাবে সতর্ক করেছেন-

کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ ؕ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ

‘প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর অবশ্যই কেয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার মাধ্যমে জাহান্নামের আজাব থেকে নাজাত এবং জান্নাতের অনন্তসুখ ও অনাবিল শান্তির মধ্যে জীবনের প্রকৃত সাফল্য নিহিত। পরকাল ও পরকালের সফলতা সম্পর্কে ইসলামি আকিদার মূলকথাও এটা।

Advertisement

সুতরাং দুনিয়ার জীবনে মানুষের কৃতকর্মের যথাযথ ও পরিপূর্ণ ফল ভোগ করার জন্য একটি অনন্তজীবন প্রয়োজন আর সেটাই হচ্ছে পরকাল। পরকালের জবাবদিহিতার মানসিকতাই মানুষকে দায়িত্বশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে।

মনে রাখতে হবে

প্রথমত- মৃত্যু এমন ধ্রুব সত্য বিষয় যে, তা থেকে কারো নিষ্কৃতি পাওয়ার কোনো পথ নেই।

দ্বিতীয়ত- দুনিয়াতে ভালো-মন্দ যে যা-ই করুক না কেন, তাকে তার পরিপূর্ণ প্রতিদান পরকালে দেওয়া হবে।

তৃতীয়ত- প্রকৃত সফলতা সেই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, যে দুনিয়াতে থাকাকালীন স্বীয় প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করে নিয়েছে এবং যার ফলস্বরূপ তাকে জাহান্নাম থেকে দূর করে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চতুর্থত- পার্থিব জীবন হল ধোঁকার সম্পদ। এই ধোঁকা থেকে যে নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারবে, সেই হবে ভাগ্যবান। আর যে এই ধোঁকার জালে ফেঁসে যাবে, সেই হবে ব্যর্থ ও হতভাগা।তাই দুনিয়াতে আল্লাহ, রাসুল, কোরআন, ফেরেশতা প্রভৃতির ওপর বিশ্বাস স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে পরকাল বা পরকালের জীবনের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমান গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য একান্ত অপরিহার্য। যারা মানুষের জীবনের তিনটি পর্যায় ও যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে; তারাই পরকালে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে, জান্নাত পেয়ে ধন্য হবে। আর তারাই হবে সফলকাম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের সফলতায় কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবনগড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস