জোকস

শরৎচন্দ্র পণ্ডিতের মজার ঘটনা: গুরুদেবের ক্ষতি

১৩৪৪ সালে বিচিত্রা পত্রিকার শ্রাবণ সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য ধর্ম নামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। তৎকালীন পাঠক সমাজে প্রবন্ধটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। এমনই এক আলাপ আলোচনা চলতে থাকে ভারতবর্ষ পত্রিকার অফিসে। রয়েছেন কয়েকজন সাহিত্যিক ও কর্মীরা।

Advertisement

আলোচনার বিষয় রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যধর্ম প্রবন্ধ। আলোচনা যখন জমে উঠেছে তখন এলেন শরৎচন্দ্র, বললেন, কী আলোচনা হচ্ছে? কথা বলতে বলতে শরৎচন্দ্রও ডুবে গেলেন আলোচনায়।

এক সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রকে বললেন, শরৎদা, গুরুদেব যাঁদের সম্পর্কে হাল ছেড়ে দিয়েছেন, আপনিও মনে হয় তাঁদের মধ্যে একজন। লেখাটিতে গুরুদেব যে সব অভিযোগ করেছেন সেগুলো দেখেছেন তো?

শরৎচন্দ্র শুনে বললেন, গুরুদেব এই বলে আমার কী ক্ষতি করবেন? আমি নিজের অজান্তে তার যা ক্ষতি করে বসে আছি তার তুলনায় এটা কিছুই না।

Advertisement

শরৎচন্দ্রের কথা শুনে বিস্মিত সকলেই। তারা জানতে চাইলেন, আপনি গুরুদেবের ক্ষতি করেছেন, শরৎদা? শরৎচন্দ্র মাথা নেড়ে উত্তর দিলেন, হা, ক্ষতি করেছি। তো।

প্রত্যেকে জানতে চাইলেন, কী ক্ষতি করেছেন? সকলে চাপ দিতে শরৎচন্দ্ৰ বললেন, কী ক্ষতি শুনতে চাও? গুরুদেবের সঙ্গে গিরিজা বসুর আলাপ করিয়ে দিয়েছি।

গিরিজা কেমন আড্ডাবাজ তা তো তোমরা জানাই। তার ওপর তিনি কবিতাও লেখেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলাপ হওয়ায় এখন তিনি দুবেলা গুরুদেবের কাছে যাতায়াত শুরু করবেন, কবিতা শোনাবেন, গল্প করবেন।

গুরুদেব মুখে কিছুই বলবেন না, কেউ দেখা করতে এলে তিনি না বলতে পারবেন না। গিরিজা অনবরত গুরুদেবের কাছে যাবে। আর তার ফলে লেখার ক্ষতি হবে রবীন্দ্রনাথের। আর এক লাইনও লিখতে হবে না। গুরুদেবকে। গিরিজার জালাতনে তিনি অতিষ্ট হয়ে উঠবেন। এটা ক্ষতি নয়?

Advertisement

শরৎচন্দ্রের কথা শুনে প্রত্যেকেই হো হা করে হেসে উঠলেন। শরৎচন্দ্র শেষে হেসে বললেন, গুরুদেব আমার যে ক্ষতি করেছেন তার তুলনায় বরং আমিই বেশি। ক্ষতি করেছি গুরুদেবের।

লেখা: সংগৃহীতছবি: সংগৃহীত

প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।

কেএসকে/জেআইএম