আন্তর্জাতিক

সমাধান ছাড়াই শেষ ইউক্রেন-রাশিয়া প্রথম দফা সংলাপ

রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পঞ্চম দিনে বেলারুশে শান্তি সংলাপে বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল। তাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। তবে কোনো সমাধান না আসায় দ্বিতীয় দফা বৈঠকে সম্মত দু-পক্ষই। এখন তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবেন। প্রতিটি দেশই নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসবেন।

Advertisement

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর ১টার একটু আগে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা বেলারুশে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে ওই আলোচনা চলে বলে জানায় সিএনএন।

বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পোডোলিয়াক সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা প্রথমদফা আলোচনা করেছেন। এবারের আলোচনায় তাদের মূললক্ষ্য ছিল যুদ্ধবিরতি এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে বের করা।

তিনি বলেন, প্রতিনিধিরা এসব বিষয় নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করে একটি পথ খুঁজে বের করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার বিষয়েও তারা একমত হয়েছেন। এখন তারা পরামর্শ করার জন্য যার যার রাজধানীতে ফিরে যাচ্ছেন।

Advertisement

উভয়পক্ষ আরও এক দফা বৈঠকে বসা নিয়ে আলোচনা করেছে। যেখানে এসব আলোচনার আরও আগ্রগতি হতে পারে, যোগ করেন মিখাইল পোডোলিয়াক।

বৈঠক শুরু হওয়ার আগে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ান সৈন্যদের তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি অবিলম্বে ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদ দেওয়ার আহ্বান জানান।

অন্যদিকে রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলছেন, মস্কো এমন একটি বোঝাপড়া চায়, যা দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে।

এর আগে ইউক্রেনীয়-বেলারুশ সীমান্তে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন, এমনটাই বলা হয়েছিল সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের বহরকে ‘বিশেষ সতর্কতায়’ রাখতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন। এটি রাশিয়ার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বহরের জন্য ‘সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা’।

Advertisement

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশের পরপরই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেন রাশিয়ার সেনারা। উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে, এমনকি বেলারুশ থেকেও হামলা চালানো শুরু হয়। ধীরে ধীরে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ সেনারা। ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে শুরু হয় তীব্র লড়াই।

সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশের আগে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। পুতিনের এ ঘোষণার পরপরই শুরু হয় ইউক্রেন আগ্রাসন।

কেএসআর/