হজরত আদম আলাইহিস সালামের বেহেশতে বসবাস শয়তানের প্রতিহিংসার আগুণকে দিগুণ করে দেয়। শয়তান হজরত আদম ও হাওয়ার নিকট আল্লাহর নামে শপথ করে প্রতারণা আশ্রয় নেয়। ‘সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বলল, আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্খী।’ কসম খেয়ে প্রতারণা মাধ্যমে শয়তান হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামকে বেহেশত থেকে বের করেছিলেন। আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেন-অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শক্র হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৩৬)অত্র আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজরত আদমকে লক্ষ্য করে বলেছেন যে, তোমরা একে অপরের শত্রু। অর্থাৎ মানুষের শত্রু শয়তান এবং শয়তানের শত্রু মানুষ। শয়তান মানুষের শত্রু এ কথা সুস্পষ্ট। কারণ সে মানুষকে আল্লাহর হুকুম পালনের পথ থেকে সরিয়ে রাখার এবং ধ্বংসের পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করে।আর শয়তানের শত্রু মানুষ এ কথা তাৎপর্য হচ্ছে, শয়তানের প্রতি শত্রুতার মনোভাব পোষণ করাই হচ্ছে বিশ্ব মানবতার ঈমানের দাবি। অথচ শয়তান মানুষের চোখের সামনে প্রবৃত্তির কামনা-বাসনার প্রলোভন এমনভাবে হাজির করে যে মানুষ সেগুলোর দ্বারা প্রতারিত হয়ে তাকে নিজের বন্ধু ভেবে বসে। আর এভাবেই মানুষ শয়তানের কাছে পরাজিত হয় এবং ফেঁসে যায়। যার জলন্ত প্রমাণ হজরত আদম আলাইহিস সালাম ও তাঁর স্ত্রী।শয়তানের প্রতারণার ফলাফল আল্লাহ অন্যত্র উল্লেখ করেন বলেন, ‘অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বলল, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী। সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বলল, আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্খী। (সুরা আরাফ : আয়াত ২০-২১)পরিশেষে....মানুষ জমিনে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হয়েছে যা শয়তান বরদাস্ত করতে পারেনি বিধায় সে বনি আদমকে পথহারা করার আজীবন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। সুতরাং মুসলিম উম্মাহ’র প্রতি আহ্বান, কুরআন-হাদিস অনুযায়ী জীবন গড়ুন। শয়তানের প্রতারণা থেকে হিফাজত থাকুন।এমএমএস/পিআর
Advertisement