ভ্রমণপিপাসু বাঙালি বিগত দু’বছর ধরে ঘরের কোণে আটকে পড়েছিল। দৈনন্দিন একঘেয়েমি জীবনযাপন মানুষকে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত করে তুলেছে।
Advertisement
করোনার আবহ এখন অনেকটাই কমেছে। বর্তমানে তাই দৈনন্দিন একঘেয়েমি কাটিয়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষ ছটফট করছে একটু বেড়ানোর আনন্দ উপভোগ করার জন্যে।
প্রত্যেকেই এখন ঘেরাটোপের বাইরে এসে নির্মল নিঃশ্বাসে আবার নতুন করে জীবনযাপন করতে চাচ্ছেন। তাই ভ্রমণপিপাসু মানুষ আজ খুঁজে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণের বিভিন্ন ঠিকানা।
এমন সময়েই জাগোনিউজ২৪ এর সংবাদ প্রতিনিধি বেরিয়ে পড়েছেন ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের কাছে বিভিন্ন ভ্রমণস্থলের ঠিকানা নিয়ে। আজ আপনাদেরকে খোঁজ দেওয়া হলো সিকিমের একটি দুর্দান্ত স্পটের।
Advertisement
সিকিমের ‘সিল্করুট’ সম্পর্কে কমবেশি হয়তো অনেকেই জানেন! সেখানে কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, কত খরচ ও কোথায় কোথায় ঘুরবেন সে তথ্যই জেনে নিন এই প্রতিবেদনে-
যারা ফ্লাইটে যাবেন, তারা কলকাতা থেকে বাগডোগরা হয়ে গাড়িতে উঠে বসবেন। আর যারা বাসে যেতে চাইলে ধর্মতলা থেকে শিলিগুড়ি হয়ে পৌঁছাতে হবে সিল্ক রুটে। যারা কলকাতা হয়ে ট্রেনে সিল্করুটে যেতে চান, তারা শিয়ালদহ থেকে দার্জিলিং মেল, কাঞ্চনকন্যা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, পদাতিক এক্সপ্রেসে পৌঁছাবেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। সেখান থেকে বিভিন্ন রুটে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পৌঁছাতে পারবেন।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে বিভিন্ন ট্রাভেল অ্যাজেন্সির মাধ্যমে সিল্করুট পৌঁছানো যায়। তবে এর জন্য আগে থেকেই বুকিং করতে হয়। এ ছাড়াও সেখানে পৌঁছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেও দরদাম করে যেতে পারেন। তবে আগে থেকে বুকিং রাখাই ভালো।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে চেপে সোজা চলে যেতে হবে সিলারিগাওতে। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে গ্ৰামটাকে ঘুরে দেখে নেওয়া যাবে। পরের দিন সকালেই বের হয়ে পড়ুন রামতে’র ভিউ পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। পায়ে হেঁটেই দেখে নেওয়া যায়। চাইলে সেখানে ট্রেকিংও করতে পারেন। রাতে সিলারিগাওতেই থাকতে হবে।
Advertisement
দ্বিতীয় দিন সকালের নাস্তা সেরে রংলিতে যেতে হবে পারমিট করাতে। সেখান থেকে সোজা জুলুকে পৌঁছাতে হবে। সেখানকার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্দ করে দেবে। চারদিকে পাহাড় সাদা বরফে ঢাকা। যা আপনাকে দেবে এক অনাবিল আনন্দ। মনে হবে, এ আপনি কোথায় এলেন!
গাড়ি থেকে নেমে বরফ নিয়ে না খেললে আপনার ভ্রমণই হবে বৃথা। রাস্তায় দেখবেন সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির, রিষি নদী, কুওখোলা ফলস। রাতের থাকতে পারবেন জুলুকেই। তৃতীয় দিন জুলুক থেকে জিগজাগ রোড হয়ে থামবি ভিউ পয়েন্ট, ওল্ড বাবা মন্দির, গনাথং ভ্যালি, কুপুপ লেক দেখে হোটেলে ফিরে রাপত কাটিয়ে নিন।
এরপর চতুর্থ দিন জুলুক থেকে সকালের নাস্তা খেয়ে চলে যান রোলেপ দেখতে। সেখানে একে একে ভ্রমণ করুন হাঙ্গিং ব্রিজ ও বুদ্ধা ফলস। এরপর রোলেপের যে কোনো হোটেলেই রাত কাটিয়ে নিন।
পঞ্চম দিন দ্রুত সকালের নাস্তা খেয়ে রোলেপকে বিদায় জানিয়ে ও মনে একরাশ আনন্দ নিয়ে রওনা দিতে হবে নিউ জলপাইগুড়ির দিকে। ট্রেন, ফ্লাইট বা বাস ধরে ফিরে আসুন কলকাতায়।
সিকিমের এসব নৈস্বর্গীক দৃশ্য দেখতে চাইলে ও ভ্রমণ সহজ করতে যোগাযোগ করতে পারেন নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ উদ্যোগী সংস্থার সঙ্গে। মোবাইল নম্বর- 9830362877 ও 8116415880 এখানে যোগাযোগ করলেই ভ্রমণের সব ব্যবস্থাই তারা করে দেবেন।
ভ্রমণ উদ্যোগী সংস্থার প্যাকেজে ভ্রমণ করতে চাইলে জনপ্রতি খরচ পড়বে ২২-২৫ হাজার টাকা, ৫ দিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নিয়ে যাবে ও টুর শেষ করে আবার আপনাকে সেখানেই পৌঁছে দেবে।
তবে আর দেরি কেন চলুন ঘুরে আসি পূর্ব সিকিমের সিল্করুট, জুলুকসহ পাহাড়ের মন মাতানো নৈসর্গীক দৃশ্যের মাঝে নিজেকে মেলে ধরতে।
জেএমএস/এমএস