ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর ন্যাটো জোটের অংশ হিসেবে ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোমানিয়ায় ১৭৪ সৈন্য মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে পর্তুগাল। আগামী সপ্তাহ থেকে সেনা পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হবে।
Advertisement
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পর্তুগালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে জরুরি সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিয় কোস্তা এই ঘোষণা দেন।
আন্তোনিয় কোস্তা বলেন, কৌশলগত সার্বভৌমত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য রোমানিয়ায় অবস্থানরত সৈন্যের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাটো। আমরা সেখানে ১৭৪ জন সৈন্য পাঠাব। পর্তুগাল সেনাবাহিনীর একটি দল রোমানিয়া সীমান্তে পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ন্যাটোর হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট মোকাবিলা করতে বদ্ধ-পরিকর। সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল প্রস্তুত রেখেছি। ন্যাটোর ইউরোপিয়ান কমান্ডেন্ট থেকে যখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তখনই কার্যক্রম শুরু হবে। ন্যাটো যেহেতু সরাসরি ইউক্রেনের ভেতরে প্রবেশ করছে না তাই সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে ঘাঁটি করবে।
Advertisement
এদিকে রোমানিয়ার সীমান্তে প্রায় ৫০০ সৈন্য ও সশস্ত্র যানবাহন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স। আগামী মার্চের পরও রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া দেশ এস্তোনিয়ায় নিজেদের সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স। এস্তোনিয়ায় সামরিক যানবাহন ছাড়া ২০০ থেকে ২৫০ সৈন্য মোতায়েন রাখার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সের সেনাপ্রধান থিয়েরে বুরখারদ।
পর্তুগালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আন্তঃবিভাগীয় প্রধানরা। এসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে নিজেদের আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান। প্রয়োজনে ইউয়ের যেসব দেশ রাশিয়া থেকে সরাসরি তেল ও গ্যাস ব্যবহার করছে তাদের তা পরিহার করা কথাও বলেন পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী কোস্তা।
বিপর্যস্ত ইউক্রেনবাসীর পাশে দাঁড়াতে ও অভিবাসী ভিসা পদ্ধতি চালু করার ঘোষণা দিয়ে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনের কোনো নাগরিক চাইলেই পর্তুগালে পৌঁছানো মাত্র ফিন্যান্স অ্যাক্টিভিটি নম্বর অথবা ফিন্যান্স কন্ট্রিবিউশন নম্বর ও সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর চালু করে তাদের জীবন-জীবিকা সবকিছুই চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক রাখতে পারবেন।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান ঠেকাতে সম্প্রতি মস্কো সফর করা ছাড়াও নানান কূটনীতিক চেষ্টা চালান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রো। এরপরও রাশিয়া গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে।
Advertisement
শনিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে উভয় পক্ষের সেনাদের সংঘর্ষ চলছে। রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর এরই মধ্যে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রাশিয়ার এই হামলার মুখে ইউক্রেনের হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
চলতি বছরে ন্যাটোর ইউরোপীয় কমান্ডে পর্তুগিজ সেনাবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ন্যাটোর হয়ে পর্তুগিজ সেনাবাহিনীর ১৭৪ জনের একটি দল দ্বিতীয়বারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক সংঘাত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অংশ নিতে যাচ্ছে।
একেআর/এমআরএম/এএসএম