আন্তর্জাতিক

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে বিমান শিল্পে বড় বিপর্যয়

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। এই মুহুর্তে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে তীব্র লড়াই চলছে দেশ দুটির সেনাদের মধ্যে। ফলে সর্বত্র এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মানুষের জীবন বিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বের এয়ারলাইন শিল্পে বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

ইউক্রেন আগ্রাসনের পর পশ্চিমাদের একের পর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্য রাশিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন্স অ্যারোফ্লোটের চলাচল নিষিদ্ধ করে। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আরও দুটি ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এদিকে, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, এটি বিমানের যন্ত্রাংশ রপ্তানির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা এঁটে দেবে।

পোল্যান্ড এবং চেক রিপাবলিকও জানিয়েছে, তারাও রাশিয়ার সঙ্গে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। জাপান এয়ারলাইন্সও বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মস্কোর সঙ্গে তাদের একটি ফ্লাইট বাতিল করে। এছাড়া, বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর কিয়েভ তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। বেলারুশও আকাশসীমা আংশিক বন্ধ করেছে।

যুক্তরাজ্যের পাল্টা জবাবে রাশিয়া তাদের আকাশে দেশটির বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাজ্যের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অবন্ধুসুলভ আচরণের কারণে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

মস্কো ও লন্ডনের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার কারণে ভার্জিন আটলান্টিক ও ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমান চলাচলে গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়ার মধ্যে মোট ২৪ টি ফ্লাইটের শিডিউল ছিল। আর লন্ডন এবং মস্কোর সেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরের মধ্যে চলাচল করার কথা ছিল অ্যারোফ্লোটের ১৬ টি এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ৮ টি ফ্লাইট।

জাতিসংঘের এভিয়েশন এজেন্সির সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের গভর্নিং কাউন্সিলের শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।

সিরিয়ামের ( অর্থ, মহাকাশ, ভ্রমণ, সরকার এবং এয়ারলাইন্স সংক্রান্ত বিশ্ব নেতাদের কাছে ডেটা এবং বিমান চালনা বিশ্লেষণমূলক সমাধান সরবরাহ করে) যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রধান উপদেষ্টা রব মরিস বলেছেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনে ইউরোপের বিমান শিল্পে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

টানা এক মাস ধরে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এর মাঝে সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দুই স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় পুতিন সরকার। অঞ্চল দুটিতে রাশিয়ার সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মস্কো।

Advertisement

স্থানীয় সময় সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। ধীরে ধীরে সেনা মোতায়েনের পর বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের ওপর হামলা চালায় রাশিয়া।

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি

এসএনআর/এএসএম