ধর্ম

যে কারণে মর্যাদার দিক থেকে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ

জুমা অত্যন্ত মর্যাদার দিন। মর্যাদার দিনটিতে অনেক নেক কাজ সংঘটিত হয়েছে। উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জুমার দিনের ইবাদতকারীরাই পরকালে সবার আগে মর্যাদা ও সম্মান পাবে। সবার আগে মর্যাদা ও সম্মান পাওয়ার কী কারণ বর্ণনা করেছেন নবিজী?

Advertisement

জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব

জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্বের কারণেই মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদিকে সবার আগে সম্মান ও মর্যাদা দান করবেন। মুসলিম উম্মাহ হবে সবার অগ্রগামী। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন এভাবে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুনিয়াতে আমাদের আসার সময় সব জাতির (ইয়াহুদি-খ্রিষ্টান) পরে। কিন্তু কেয়ামতের দিন আমরা সবার অগ্রগামী। অবশ্য আমাদের আগে ওদেরকে (ইয়াহুদি ও নাসারাকে) কিতাব দেওয়া হয়েছে। আমরা কিতাব (কোরআন) পেয়েছি ওদের পরে। এই (জুমার) দিনের সম্মান ওদের (ইয়াহুদি-খ্রিষ্টান) উপর ফরজ করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা তাতে মতভেদ করে বসে। পক্ষান্তরে (জুমার দিনকে গ্রহণ করার ব্যাপারে) আল্লাহ তাআলা আমাদের তাতে একমত হওয়ার তওফিক দান করেছেন। সুতরাং সব মানুষ আমাদের থেকে পেছনে। ইয়াহুদিরা আগামী (শুক্রবারের পরের) দিন (শনিবারকে জুমার দিনের মতো) সম্মান করে  এবং নাসারারা করে তার পরের দিনকে (রোববার)।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

Advertisement

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদিসে বিষয়টি সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন যে, বড় বড় জাতিদের মধ্যে যারা আসমানি কিতাব পেয়েছে, তারা ইবাদতের বিশেষ দিনও পেয়েছে। আল্লাহ তাআলা সবাইকে জুমার দিন দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু আগের কোনো জাতি তা গ্রহণ করতে সম্মত হয়নি। মহান আল্লাহ তার রহমতে মর্যাদার এ দিনটি উম্মতে মুহাম্মাদিকে দান করেছেন। অথচ উম্মতে মুহাম্মাদি দুনিয়াতে এসেছে সবার পরে।

পক্ষান্তরে আগের বড় দুই জাতি তাদের ইবাদতের দিন হিসেবে যে দুই দিনকে গ্রহণ করেছে, তা দিনসমূহের ধারাবাহিকতায় জুমার দিনের পরে। যদিও উম্মতে মুহাম্মাদি সবার পরে এসেছে কিন্তু মর্যাদা ও ধারাবাহিকতায় সবার আগের গুরুত্বপূর্ণ দিন জুমাকে ইবাদতের দিন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এ কারণেই মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদিকে সবার আগে মর্যাদা দান করবেন। পরকালে উম্মতে মুহাম্মাদি হবে সবার অগ্রগামী।

মূল কথা হলো

পরকালে (কেয়ামাতের দিন) জুমার ফজিলতের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতগণ সব কার্যক্রমে আগের সব জাতির চেয়ে অগ্রগামী হবে।

Advertisement

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোরআনের এ নির্দেশর ওপর যথাযথ আমল করা। যেভাবে মহান আল্লাহ ঈমানদারদের লক্ষ্য করে ঘোষণা করেছেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

‘হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিন নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)

যারা কোরআনের এ নির্দেশ মেনে জুমার দিনের মর্যাদা সম্মানের প্রতি সচেতন হবে; তাদের জন্যই জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান অপেক্ষা করছে। তাই জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবনে সবাইকে সতর্ক থাকা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে জুমার দিনের ফজিলত বরকত এবং সুমহান মর্যাদা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস