বিনোদন

ত্রিপুরায় চলছে ৩ দিনব্যাপী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব

ভৌগোলিক সীমারেখা কখনোই পারস্পরিক হৃদ্যতা কিংবা আত্মিক সম্পর্কের পথে অন্তরায় হতে পারে না। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার বিলাসবহুল একটি বেসরকারি হোটেলে আয়োজন করা হয় ২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের।

Advertisement

এই অনুষ্ঠানেই একথা বলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।

তিনি বলেন, ‘ভারত বিশ্বের বহু দেশের সাথেই কোটি কোটি টাকার লেনদেন করছে। এতে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে ঠিকই, কিন্তু আত্মিক সম্পর্কের বিষয়টি পুরোপুরিভাবেই আলাদা। যা রয়েছে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে। অথচ অন্যান্য দেশের তুলনায় সে দেশের সাথে এতো বেশি পরিমাণ লেনদেনও করা হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ত্রিপুরায় চলচ্চিত্র চিত্রায়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভবনাময় দিকগুলোর মধ্যে জল, রেলপথসহ যোগাযোগের নয়া দিগন্তের উন্মোচন হওয়ার মতো বিষয়টিও রয়েছে। ধীরে ধীরে উত্তর পূর্ব ভারতের বাণিজ্যিক করিডোর হিসেবে গড়ে উঠছে ত্রিপুরা।’

Advertisement

তিনি আত্মিক সম্পর্কের পাশাপাশি ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের দুই প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কেরও প্রসার ঘটছে বলে জানান। ২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি ত্রিপুরায় শিল্পের অনুকূল বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলেই এদিন জানান।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৫ বছরে সরকার রাজ্যকে ঠিক কোন দিশায় নিয়ে যেতে চাইছে সেই লক্ষ্যে ‘লক্ষ্য ২০৪৭' শীর্ষক দিক নির্দেশিকাও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। শিল্প সম্ভাবনাময় দিকগুলিতে শিল্পপতিরাও বিনিয়োগের সঠিক রূপরেখা পাবেন এ থেকে।

তিনি ত্রিপুরা রাজ্যে তৈরি হওয়া বিনিয়োগ অনুকূল শিল্প পরিমন্ডলকে কাজে লাগিয়ে শিল্প কারখানা স্থাপনসহ বাণিজ্যিক অগ্রগতিতে এগিয়ে আসতেও আহ্বান জানান বাংলাদেশের শিল্পপতিদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। রেলপথেও এক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হবে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭১'র মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলো তা কখনও ভোলার নয়। বাস্তবিক আপ্যায়নের পাশাপাশি মনের দুয়ারও খুলে দিয়েছিলেন এই অঞ্চলের মানুষ।’

Advertisement

তিনি ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের ভাষা, খাদ্য, পোশাক এবং সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য দুই অঞ্চলের সৌভ্রাতৃত্ব এবং আত্মিক সম্পর্ককে বাড়িয়ে তুলেছে। চলচ্চিত্র উৎসব সুদীর্ঘ এই সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলেও মনে করেন তিনি। ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টারও ভূয়সী প্রশংসা করেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের এই মন্ত্রী।

ত্রিপুরা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘শিল্প ও সংস্কৃতির আদান প্রদান ও তার বিকাশে গুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সাথে মিলে রাজ্যে একটি চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠান করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।’

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র উৎসবটি বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত।

উৎসবে যোগ দিতে গায়িকা মমতাজ, নায়ক ফেরদৌস, অপু বিশ্বাসসহ আরও অনেকেই কলকাতায় গিয়েছেন।

এলএ/জিকেএস