বোলাররা সাফল্যের সঙ্গে উৎড়ে গেলেও বিপিএলে দেশের তরুণ ব্যাটারদের পারফরম্যান্স তেমন ভালো হয়নি। জাতীয় দলে নাম লেখানো লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান-কেউই সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।
Advertisement
তাই বিপিএল শেষে দেশের দুই শীর্ষ স্থানীয় প্রশিক্ষক এবং ফাইনালিস্ট দলের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দীন তরুণদের পারফরম্যান্সে হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন। তাদের দুজনার কথার সারমর্ম হলো, তরুল প্রজন্ম সেভাবে সামনে এগিয়ে আসতে পারেনি। ম্যাচ জেতানো আর দলকে টেনে নেয়ার সামর্থ্য তৈরি হয়নি এখনও।
সময়ের দুই সেরা কোচের অমন হতাশার রেশ না মিটতেই বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব আর মেহেদি হাসান মিরাজ।
একদম খাদের কিনারায় দাঁড়িয়েও অসামান্য দক্ষতা, আস্থা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাট চালিয়ে সপ্তম উইকেটে ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েছেন আফিফ-মিরাজ।
Advertisement
তরুণরা তো এবার দেখিয়ে দিলেন। মিরাজ-আফিফের এমন পারফরম্যান্সের পর প্রশ্নটা উঠছে জোরেসোরে- বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার আসলেই কি বড় কারণ আছে?
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর ভাবনা কী? তিনি কী মনে করেন? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হলে জাগো নিউজকে একটু ঘুরিয়ে জবাব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক।
অনেক কথার ভিড়ে নান্নু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তরুণরা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখনও দায়িত্ব নিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে না পারলেও ওয়ানডেতে পারে। ওয়ানডেতে টিম বাংলাদেশ তুলনামূলক বেটার ক্রিকেট খেলে।
নান্নুর কথা, ‘অন্য ফরম্যাটের সাথে এই ফরম্যাট মেলালে তো হবে না। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আমাদের পুরো দলেরই পারফরম্যান্সে একটা ধারাবাহিকতা আছে। কম বেশি পারফরম্যান্সেও আছে ভারসাম্য।’
Advertisement
‘ওয়ানডেতে কিন্তু আমাদের টিম পারফরম্যান্স বরাবরই ভালো। দলের মধ্যে একটা ভারসাম্য আছে। সেখানে তরুণদের পারফরম্যান্স মন্দ না। এই ফরম্যাটে আমাদের তরুণদের আগেও ভালো খেলার রেকর্ড আছে।’
মিরাজ আর আফিফের প্রশংসার পাশাপাশি বোলারদের ভূমিকা ও অবদানের কথাও বেশ জোর দিয়ে বলতে চান নান্নু। তার মূল্যায়ন, ‘টপ অর্ডার ফেইল করেছে। মিডল অর্ডারে এসে মিরাজ আর আফিফ দারুণ খেলে জিতিয়েছে । সেটা তো অবশ্যই খুব ভাল লাগার। তবে শুধু ব্যাটিংয়ের কথা বললে হবে না। আমাদের বোলারদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে। জয়ের পেছনে অবদান আছে তাদেরও।’
আফগানিস্তানকে ২১৫ রানে অলআউট করে দেওয়া জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররা, মনে করিয়ে নান্নু বলেন, ‘সকালে বোলিং ভালো হয়েছে। বোলাররা অনেক নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। ২১৫-তে অলআউট করেছে। সেটাও ভালো অর্জন। আফগানিস্তানের শুরু ভালো ছিল। বোলাররা সেখান থেকে কামব্যাক করেছে।’
বুধবার সকালে আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি বল হাতে রীতিমত আগুন ঝরিয়েছেন। তার আগুনে বোলিংয়েই ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। কেন এমন হলো? নান্নু মনে করেন, এটা হতেই পারে।
প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘ফারুকির বলগুলো জোরের ওপর একটু সুইং করেছে। আর আমাদের টপ অর্ডার একটু বেশি অ্যাক্রোস খেলে ফেলেছে। এটা খেলারই অংশ। এটা হয়। হতেই পারে। ব্যাটারদের ভুলও খেলার অংশ। তবে এই ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে।’
নান্নুর শেষ কথা, ‘সিরিজের সুইচ অন হবার পর থেকে সব পদক্ষেপই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা খাদের কিনারায় পড়ে গিয়েও জিতেছি। তবে সেটা এখন অতীত। এখন পরের ম্যাচে সেখান থেকে রিকভার করা এবং ফ্রেশ হয়ে খেলতে হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলতে হবে। নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।’
এআরবি/এমএমআর/এএসএম